আজ রবিবার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১
চট্টগ্রাম-২(ফটিকছড়ি)

নৌকা-তরমুজে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস; পিছিয়ে নেই একতারাও!

সালাহউদ্দিন জিকু , ফটিকছড়ি : | প্রকাশের সময় : রবিবার ৭ জানুয়ারী ২০২৪ ০৯:১৮:০০ পূর্বাহ্ন | উত্তর চট্টগ্রাম
  • ভোট কেন্দ্রে পৌঁছেছে নির্বাচনী সরঞ্জামাদি।
  • সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ব্যালেটের মাধ্যমে ভোট প্রয়োগ করবে ৪ লাখ ৫৬ হাজার ৪৯০ জন ভোটার।
  • বহিরাগত এনে কেন্দ্র দখলের শঙ্কা প্রকাশ দুই প্রার্থীর।

আজ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এই নির্বাচনে চট্টগ্রাম-২ (ফটিকছড়ি) আসনে ৯জন প্রার্থীর মধ্যে ফুলের মালা প্রতীকের প্রার্থী বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারি নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালেও ৮ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন। ভোটাররা সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ভোট প্রদানের মাধ্যমে তাদের পছন্দের প্রার্থীকে নির্বাচিত করবেন। 

 

নির্বাচনে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হওয়ার আভাস পাওয়া যাচ্ছে স্বতন্ত্র প্রার্থী আবু তৈয়বের(তরমুজ) সঙ্গে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী খাদিজাতুল আনোয়ার সনির(নৌকা)। এ আসন থেকে এবারের নির্বাচনে দুইজনই জয়লাভের আশা প্রকাশ করেছেন। তারা তাদের নির্বাচনী জনসভাগুলোতে নিজের যোগ্যতা তুলে ধরে মানুষের কাছে ভোট চেয়ে ব্যাপক প্রচারণাও চালিয়ে ছিলেন। সম্প্রতি নতুন নিবন্ধন পাওয়া বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির চেয়ারম্যান শাহজাদা সাইফুদ্দিন আহমদ মাইজভান্ডারি এ আসনে নৌকা পাচ্ছেন বলে গুঞ্জন উঠার পর আলোচনায় আসেন। তিনি তার দলীয় প্রতীক একতারা নিয়ে লড়ছেন। তার একাধিক নেতাকর্মী জানান, তরমুজ ও নৌকার প্রার্থীর ভোট কাটাকাটিতে একতারা প্রতীকের প্রার্থী সাইফুদ্দিন মাইজভান্ডারি নির্বাচিত হতে পারেন বলে দাবী করেন।

 

এছাড়া নির্বাচনে ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের মীর মুহাম্মদ ফেরদৌস আলম(চেয়ার), বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের এড. মুহাম্মদ হামিদ উল্লাহ্ (মোমবাতি), জাতীয় পার্টির মোহাম্মদ শফিউল আজম চৌধুরী (লাঙ্গল), স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ শাহজাহান (ঈগল) ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ রিয়াজ উদ্দিন (ফুলকপি) প্রতীক নিয়ে লড়ছেন। আজ ভোট গননা শেষে ৮ প্রার্থীর মধ্যে কে পড়বেন জয়ের মালা তা নির্ধারণ হবে।

 

অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষ্যে সকল প্রস্তুতি রয়েছে প্রশাসনের। ১৪২ টি কেন্দ্রে ভোট দেবেন ৪,৫৬,৪৯০ জন ভোটার। তার মধ্যে পুরুষ ভোটার রয়েছেন ২,৩৯,৯০৪ জন, মহিলা ভোটার ২,১৬,৫৮৩ জন, হিজড়া ভোটার ৩ জন। এদিকে ১৪২ কেন্দ্রের মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ ২২ টি কেন্দ্র হিসেবে চিন্তিত করা হয়। এতে, কম ঝুঁকিপূর্ণ ১০৮ টি এবং সাধারণ কেন্দ্র হিসেবে ধরা হয়েছে ১২টি।

 

ভোট গ্রহনের কেন্দ্র গুলো পরিদর্শন করেছেন সহকারী রিটার্নিং অফিসার মোজাম্মেল হক চৌধুরী। তিনি জানান, ঝুঁকি বিবেচনা করে পুলিশ ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলাবাহিনী মোতায়েন রয়েছে। নির্বাচনি এলাকায় শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায় প্রয়োজনে রিটার্নিং অফিসারের পরিকল্পনা অনুযায়ী নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের নেতৃত্বে সেনাবাহিনী ও র‌্যাব টহলে নেয়া হবে। এছাড়া নির্বাচনে আইনশৃংঙ্খলা রক্ষায় পুলিশ, বিজিবি ও আনসার বাহিনীর সদস্যরা মাঠে থাকবে ।

 

সূত্র জানিয়েছে,নির্বাচনে ১০ ম্যাজিস্ট্রেট, ১০ প্লাটুন বিজিবি, ২প্লাটুন র‍্যাব দায়িত্বে রাখা হয়েছে। প্রতি ৩ ইউনিয়নে ১ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, বাগানবাজার ১ ইউনিয়নে ১ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আছে। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের নেতৃত্বে বিজিবি সদস্যরা, স্ট্রাইকিং ও রিজার্ভ ফোর্স হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। প্রতি ভোট কেন্দ্রে ২ জন পুলিশ ও ১০ জন আনসার সদস্য মোতায়েন রাখা হয়েছে।  

 

ফটিকছড়ি (ওসি) অফিসার ইনচার্জ মীর মোহাম্মদ নরুল হুদা বলেন,  পুলিশ নির্বাচনি এলাকায় শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায় সর্বদা প্রস্তুত আছে। যেকোনো অপীতিকার ঘটনা শক্ত হাতে দমন করা হবে।

 

অন্যদিকে, পার্শ্ববর্তী উপজেলা থেকে বহিরাগত সন্ত্রাসী এনে সীমান্তবর্তী কেন্দ্রগুলোতে ভোট কেটে নেওয়ার শঙ্কা প্রকাশ করেন বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির চেয়ারম্যান সাইফুদ্দিন মাইজভান্ডারি (একতারা) ও স্বতন্ত্র প্রার্থী আবু তৈয়ব (তরমুজ)। গতকাল শনিবার দুপুরে পৃথক পৃথক সংবাদ সম্মেলনে উদ্বেগ প্রকাশ করেন এ দুই প্রার্থী।