বাজারমূল্য ভালো পাওয়ায় খাগড়াছড়ির কৃষকেরা ক্রমেই ক্ষতিকর তামাকের পরিবর্তে ভুট্টা চাষের দিকে ঝুঁকে পড়ছেন। মানুষ ও পশু খাদ্যের অন্যতম উপাদান ভুট্টার বাজারে চাহিদা বেশ।
ফলে চলতি বছরে খাগড়াছড়ি জেলার বিভিন্ন উপজেলায় বাণিজ্যিকভাবে পুষ্টিকর এই খাদ্যশস্যের চাষ বেড়েছে কয়েক গুণ ।
বিভিন্ন তামাকজাত কোম্পানির প্রলোভনে এক দশকের বেশি সময় ধরে খাগড়াছড়িতে চাষ হয়ে আসছে ক্ষতিকর তামাক। দেরিতে হলেও কোম্পানিগুলোর ঠকবাজি বুঝতে পেরে কৃষকেরা তামাক চাষের বিকল্প হিসেবে বেছে নিচ্ছেন ভুট্টাসহ মৌসুমি রবি শস্য চাষ। ফলে ধীরে ধীরে পাল্টাতে শুরু করেছে পাহাড়ের ফসলের মাঠের চিত্র। উৎপাদিত ভুট্টার বিক্রি নিশ্চিয়তা থাকায় কৃষকেরা চাষ করছে বাণিজ্যিকভাবে।
জেলা সদরের কমলছড়ি এলাকার চাষি জীবন চাকমা বলেন, আগে তামাক চাষ করতাম। এতে লাভ হতো ঠিক। তবে শারীরিক নানা সমস্যায় আক্রান্ত হয়েছি। পরিবারের সদস্যরাও আক্রান্ত হয়েছে। তামাক চাষ লাভের চেয়ে ক্ষতি বেশি। তাই এখন ভুট্টা চাষ করছি। ফলন দাম দুটোই ভালো পাচ্ছি।
কৃষি জমির উর্বরতা ও ক্ষতি ঠেকাতে তামাক চাষে নিরুৎসাহিত করছেন কৃষি কর্মকর্তারাও।
খাগড়াছড়ির উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা দোলন মল্লিক বলেন, তামাক চাষ থেকে কৃষকদের মুখ ফিরিয়ে নিতেই ভুট্টা চাষের প্রতি উৎসাহিত করা হচ্ছে। তামাকের ক্ষতিকর দিকগুলো নিয়ে কৃষক এখন অনেক সচেতন।
খাগড়াছড়ি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. মো. শফি উদ্দিন বলেন, গত বছর যেখানে জেলায় ৬শ ৩০ হেক্টর জমিতে তামাক চাষ হয়েছিল, সেখানে চলতি বছরে হ্রাস পেয়ে ৫শ ৮০ হেক্টরে নেমেছে। কৃষকদের তামাক চাষ ছেড়ে ভুট্টা চাষে উৎসাহিত করছি। আমরা কৃষি প্রণোদনাও দিচ্ছি। আশা করি ধীরে ধীরে তামাক চাষ কমে আসবে।
খাগড়াছড়িতে চলতি মৌসুমে ৫শ ৩০ হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষ হয়েছে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৪ হাজার ৩ শ ৩৫ মেট্টিক টন। সচেতন কৃষকরা মনে করেন, সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা বাড়ানো হলে ভুট্টা চাষেই পাল্টে দিতে পারবে খাগড়াছড়ির অর্থনীতির চিত্র।