ড্রাগন চাষ একটি লাভজনক কৃষি। এই ড্রাগন চাষ করে সন্দ্বীপ উপজেলার উত্তর মগধরা গ্রামের ড্রাগন চাষী রাসেল বদলে গেছে জীবন। রাসেল (২৮) লেখাপড়া শেষে কোন চাকরি না পেয়ে ২০২০ সালে করোনা ভয়াবহতা সময় যখন মানুষ ঘর থেকে বাহির হওয়ার সাহস করে নি, সারা পৃথিবী যখন নিস্তব্দ তখন তার বাবার কেনা ৫০ শতক জমিতে ৩০০ খুঁটিতে ড্রাগন চাষ করে। সেই থেকে ক্রমশ ড্রাগন বিক্রি করে লাভবান হচ্ছে।
এখন রাসেলের ৫০ শতাংশ জমিতে ৪০০টি খুঁটিতে ড্রাগন গাছ রয়েছে। বর্তমানে ৩০০টি খুঁটির গাছ থেকে ড্রাগন ফল পাচ্ছে সে ।গত বছর প্রায় সে ৮ টাকার ড্রাগন ও ২ লাখ টাকা চারা বিক্রি করে। সকল খরচ বাদ দিয়ে রাসেলের এখন বাৎসরিক লাভ ৫ লাখ টাকা প্রায়। ড্রাগন বাগানের পাশে রাসেলের রয়েছে একটি মোরগের ফার্ম পাশাপাশি রয়েছে ১০ টি ছাগল ৫ টি ভেড়া।
রাসেলের বাগান পরিচর্যা কারী নুর উদ্দিন বলেন আমি পরিচর্যাকরে বছরের ৮ মাস ড্রাগন কাটি বাকি চারমাস গাছ পরিচর্যা করে থাকি। এখান থেকে মালিক মাসে আমাকে ২০ হাজার টাকা বেতন দেন তাতে আমার পরিবার খুব ভাল করে চলে।
উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্য সন্দ্বীপ উপজেলায় মোট ২ হাজার শতাংশ জমিতে ছোট বড় মিলিয়ে প্রায় ৪০ টি ড্রাগন বাগান রয়েছে। সকল বাগানেই ফলের উৎপাদন ভালো এবং ফল বিক্রি করে কৃষকরা লাভবান হচ্ছে।
ড্রাগন চাষি রাসেল বলেন, আমি লেখাপড়া শেষ করে কোন চাকরি না পেয়ে ৩ বছর আগে বাবার কেনা জমিতে ড্রাগন চাষ শুরু করি ,আস্তে আস আয়তন বৃদ্ধি করেছি । ভবিষ্যতে আরো বড় বাগান করার স্বপ্ন রয়েছে আমার।এখন আমার বাগানে মেক্সিকো রেড, তাইওয়ান রেড, হোয়াইট বিউটি, থাই, ভিয়েতনাম হোয়াইট, ইসরাইল ইয়েলো, পিংকসহ প্রায় ১২ প্রজাতির ড্রাগন রয়েছে। তবে রাসেলের আরো একটি আক্ষেপ তিনি বলেন আমি বাগান করার পর উপজেলা কৃষি অফিসে কয়েকবার গিয়েছি তাদের কাছ থেকে কোন সহযোগিতা পায়নি। সহযোগিতা পেলে আমি আরো বাগান বৃদ্ধি করতে পারতাম। আমার বাগানে একটি ড্রাগন ফল ৮০০-৯০০ গ্রাম পর্যন্ত ওজনের হয়। বছরে শীত মওসুমে প্রায় চার মাস ছাড়া বছরের বাকি আট মাস ড্রাগনের ফলন অব্যাহত থাকে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মারুফ হোসেন বলেন, সব ধরনের মাটিতে ড্রাগন চাষ হয়। তবে উঁচু জমিতে ভালো ফলন পাওয়া যায়। বছরের যে কোনো সময় চারা রোপণ করা যায়। তবে এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে হলে ভালো।