কক্সবাজারের টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপে অভিযান চালিয়ে ১৪টি আগ্নেয়াস্ত্র, ৪৮৬ রাউন্ড গুলি, মাদকদ্রব্য ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পোশাকসহ ৬ রোহিঙ্গা ডাকাতকে আটক করেছে বাংলাদেশ কোস্টগার্ড। মঙ্গলবার (৩ জানুয়ারি) দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে কোস্টগার্ডের লে. কমান্ডার (মিডিয়া কর্মকর্তা) আব্দুর রহমান এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
আটক ডাকাতরা হলেন- রেজিস্ট্রার্ড রোহিঙ্গা ক্যাম্প-১৩ এর ইব্রাহিম (২৩), ২২ নম্বর উনচিপ্রাং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের মো. আমিন (৩৩), রেজিস্ট্রার্ড রোহিঙ্গা ক্যাম্প-১৩ এর মো. আরিফ (৩৩), মাহমুদুর রহমান (১৮), উনচিপ্রাং রেজিস্ট্রার্ড রোহিঙ্গা ক্যাম্প-২২ এর কানিজ (২৪) ও বালুখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্পের মো. নবী হোসেন (২৮)।
এ সময় ডাকাত সদস্যদের তথ্যমতে খড়ের দ্বীপের বনের মধ্যে চিরুনি অভিযান পরিচালনা করে বিদেশি পিস্তল ২টি, একনলা বন্দুক ৩টি, এলজি ২টি, শর্ট গান ১টি, দেশি পিস্তল ৬টি, পিস্তলের ম্যাগাজিন ৪টি, তাজা গোলা ৪৫০ রাউন্ড, ফাঁকা গোলা ৩৬ রাউন্ড, রামদা ৪টি, ইয়াবা ২০ হাজার পিস, বিদেশি মদ ২১ বোতল, বিয়ার ৫৫১ ক্যান, ডাকাতি কাজে ব্যবহৃত পোশাক ৭ সেট, হ্যান্ডকাফ ১টি, ল্যান্ড ফোন ১টি, বাটন মোবাইল ৪টি জব্দ করা হয়।
প্রেস ব্রিফিংয়ে টেকনাফ স্টেশান কমান্ডার মো. মহিউদ্দিন জামান জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে (২ জানুয়ারি) শাহপরী দ্বীপ সংলগ্ন নাফ নদীর মোহনায় একটি সক্রিয় অস্ত্রধারী ডাকাতদল ফিশিং বোটে ডাকাতির প্রস্তুতি নিচ্ছে। এমন তথ্যের ভিত্তিতে, আনুমানিক ১টার দিকে কোস্ট গার্ড স্টেশন সেন্টমার্টিন কর্তৃক নাফ নদীর মোহনায় একটি বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে। অভিযান চলাকালীন কোস্টগার্ডের উপস্থিতি টের পেয়ে ডাকাতদল তাদের বোট নিয়ে নাফ নদীর মোহনা হতে টেকনাফের দিকে দ্রুত সরে যাওয়ার চেষ্টা করতে থাকে।
এ সসময় স্টেশন সেন্টমার্টিন কর্তৃক ডাকাত দলকে ধরতে ধাওয়া করে টেকনাফ কোস্ট গার্ড স্টেশনকে অবগত করা হলে তাদের আরেকটি আভিযানিক দল বোটটির পিছু নেয় এবং ধাওয়া করে। এক পর্যায়ে স্পিড বোটটি টেকনাফেরর রঙ্গিখালীর কাছে খড়ের দ্বীপে ডাকাত সদস্যদেরকে নামিয়ে দ্রুত মিয়ানমারের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে। এসময় ডাকাত সদস্যরা দ্বীপের বনের মধ্যে লুকিয়ে যায়।
পরবর্তীতে কোস্টগার্ড স্টেশান টেকনাফ ও সেন্টমার্টিনের আভিযানিক দল দুটি যৌথভাবে দ্বীপটি চারদিক থেকে ঘিরে ফেলে। অভিযান চলাকালীন কোস্টগার্ড কর্তৃক ডাকাত দলের মূল আস্তানা ঘেরাও করে ৬ জন সশস্ত্র ডাকাত সদস্যকে আটক করা হয়।
কোস্টগার্ড জানায়, দ্বীপটি টেকনাফ থেকে দূরবর্তী, বিচ্ছিন্ন এবং জনশূণ্য হওয়ায় এই সুযোগটি কাজে লাগিয়ে একটি সংঘবদ্ধ চক্র দীর্ঘদিন যাবত ডাকাতি, মাদকদ্রব্য ও মানব পাচারসহ বিভিন্ন ধরনের অপকর্ম চালিয়ে আসছিল। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে কোস্ট গার্ড স্টেশন টেকনাফ ও সেন্টমার্টিন যৌথভাবে দীর্ঘ ৯ ঘণ্টার শ্বাসরুদ্ধকর অভিযান পরিচালনা করে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র, গোলাবারুদ ও মাদকদ্রব্যসহ ৬ ডাকাত সদস্যকে আটক করতে সক্ষম হয়।