- ৪ শতাধিক ভাসমান দোকান উচ্ছেদ
- ১৩ প্রতিষ্ঠানকে ৭৮ হাজার জরিমানা
কক্সবাজারের চকরিয়া পৌরশহরে পথচারীরা নির্বিঘ্নে যাতায়াত, যানজট থেকে মানুষ পরিত্রাণ পেতে এবং পরিচ্ছন্ন শহর গড়তে, যানজটমুক্ত রাখার জন্য উপজেলা প্রশাসন ও পৌরসভার যৌথ উদ্যোগে অভিযান চালানো হয়। এসময় পৌরশহরের চিরিঙ্গা মহাসড়কের দু'পাশে ও অভ্যন্তরীণ সড়কের ফুটপাত দখল করে গড়ে উঠা অবৈধ ৪ শতাধিক ভাসমান দোকান উচ্ছেদ
করা হয়।
এছাড়াও অভিযানের সময় প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালতের দুই নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ১৩ প্রতিষ্ঠানকে ১৩টি মামলার বিপরীতে ৭৮ হাজার জরিমানা দন্ডিত করেন।
মঙ্গলবার বিকাল ৩টা থেকে সন্ধ্যা ৬ পর্যন্ত উপজেলা প্রশাসন ও পৌরসভা কর্তৃপক্ষ এ অভিযান চালায়।
উচ্ছেদ অভিযানে নেতৃত্বে ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট) মো: ফখরুল ইসলাম ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ভ্রাম্যমান আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রাহাত উজ জামান।
অভিযানকালে পৌরসভা থেকে বিভিন্ন স্টাফ ও জনবল দিয়ে সার্বিক ভাবে সহায়তায় ছিলেন চকরিয়া পৌরসভার প্রশাসনিক কর্মকর্তা (পৌর সচিব) মাসউদ মোর্শেদ।
জানা গেছে, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের চকরিয়ায় পৌরশহরে ত্রি-লাইন বিশিষ্ট সড়ক রয়েছে। দুরপাল্লার গাড়িগুলো বক্স রোড দিয়ে চলাচল করলেও লোকাল গাড়ি চলাচল করে বক্স রোড়ের দু'পাশের সড়ক দিয়ে। এতে দু’পাশের সড়কের উপরে কয়েকশত ভাসমান দোকানের পাশাপাশি বিভিন্ন শপিংমল ও মার্কেট ঘেষে ফুটপাতের উপর স্থায়ী দোকান নির্মাণ করা হয়। এছাড়াও যত্রতত্রে বিভিন্ন পরিবহণের গাড়ি পার্কিং করায় যানজট নিত্যকার ঘটনা হয়ে উঠে। এতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয় যাত্রী, পথচারী, শিক্ষার্থী ও বিপনী কেন্দ্রে বাজার করতে আসা নারী-পুরুষদের।
সরেজমিন দেখা যায়, চকরিয়া পৌর শহরের সমবায় মার্কেট, চিরিংগা নিউ মার্কেট, হাসেম মার্কেট, সুপার মার্কেট ও আনোয়ার শপিং কমপ্লক্সসহ বিভিন্ন মার্কেটের সামনে এবং সড়কের উপরে টমটম, সিএনজি চালিত টেক্সি, ত্রি-হুইলার ম্যাজিক গাড়িসহ বিভিন্ন ছোট গাড়ি পার্কিং করে রাখা হয়। পৌরসভার কমিউনিটি পুলিশের সদস্যরা ওইসব গাড়ি সরাতে চেষ্টা করলেও তারা ব্যর্থ হন। এছাড়াও দীর্ঘদিন ধরে পৌরশহরের চিরিঙ্গায় মহাসড়কের পাশে ও অভ্যন্তরীণ সড়কসমুহে ফুটপাত দখল করে ব্যবসা পরিচালনা করায় যানজট ও পথচারীদের যাতায়াতে চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়। কোন একজন মুমূর্ষু রোগীকে যানজটের কারণে সঠিক সময়ে হাসপাতালে নিয়ে যেতে কষ্টকর হয়ে যেতো। তাছাড়া সড়কজুড়ে সিএনজি অটোরিকশা ও টমটম গাড়ি গুলো স্টেশনের রাস্তা দখল করায় যানজট নিত্যদিনই লেগে থাকে। যার কারণে উপজেলা প্রশাসনের মাসিক আইন শৃংখলা কমিটির সভার সিদ্ধান্তের আলোকে উপজেলা প্রশাসন ও পৌরসভার যৌথ উদ্যোগে মঙ্গলবার অভিযান পরিচালনা করেন। অভিযানকালে দুই নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে থানা রাস্তার মোড থেকে পুরাতন বাসস্টেশন পর্যন্ত অন্তত ৪ শতাধিক ভাসমান দোকান উচ্ছেদ করা হয়।যেসব দোকান উচ্ছেদ করা হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে ফলের দোকান, স্টেশনারী, পানের
দোকান ও বিভিন্ন কাপড়ের দোকান রয়েছে।
অভিযানের ব্যাপারে জানতে চাইলে চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো: ফখরুল ইসলাম বলেন, উপজেলা পরিষদের মাসিক আইন শৃংখলা কমিটির সভার সিদ্ধান্তের আলোকে উপজেলা প্রশাসন ও পৌরসভার যৌথ উদ্যোগে পৌরশহরকে যানজটমুক্ত রাখতে অভিযান পরিচালনা করা হয়। উপজেলা প্রশাসন ও পৌরসভার সমন্বয়ে অভিযান চালিয়ে অন্তত চার শতাধিক বিভিন্ন ভাসমান দোকান উচ্ছেদ করা হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, এসব দোকান উচ্ছেদ
অভিযান করার পূর্বে মাইকিংয়ের মাধ্যমে সতর্ক করার পরও ভাসমান দোকান
ব্যবসায়িরা দোকান সরিয়ে না ফেলায় অভিযান পরিচালনা করা হয়। এসময় বিভিন্ন অপরাধের দায়ে সংশ্লিষ্ট আইনের আওতায় ১৩ প্রতিষ্ঠানকে ১৩টি মামলার বিপরীতে ৭৮ হাজার জরিমানা করা হয়েছে।
উপজেলা প্রশাসনের এ অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে তিনি জানান।
অভিযানের সময় থানা পুলিশ, পৌরসভার কর্মকর্তা, আনসার বাহিনীর সদস্য ও কমিউনিটি পুলিশের বিপুল সংখ্যক সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।