কক্সবাজারের চকরিয়ায় সাহারবিল ইউপি চেয়ারম্যান নবী হোছাইনকে গ্রেপ্তার করতে গিয়ে পুলিশের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় চেয়ারম্যানের সন্ত্রাসীদের হামলা ও ইটের আঘাতে ৪ পুলিশ সদস্য আহত হয়। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ ৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। তবে সুকৌশলে ইউপি চেয়ারম্যান নবী হোছাইন পালিয়ে যান। চেয়ারম্যান নবী হোছাইনের বিরুদ্ধে আদালতের পরোয়ানা জারি ছিল বলে পুলিশ সূত্রে জানায়।
সোমবার রাতে উপজেলার সাহারবিল ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কোরালখালীস্থ নবী হোছাইন চেয়ারম্যানের বাড়িতে অভিযান চালায় পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানাগেছে, চেয়ারম্যান নবী হোছাইনের বিরুদ্ধে আদালতের পরোয়ানা জারি হওয়ার পর থানা পুলিশের একটি টিম অভিযান চালায়। এ সময় তার বাড়ির তৃতীয় তলার ছাদ থেকে শতাধিক ব্যক্তি পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। ওইসময় তাদের হামলায় পুলিশের ৪ সদস্য আহত হয়। পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে এ সময় সুকৌশলে চেয়ারম্যানসহ অনেকেই বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়। পরে পুলিশ ধাওয়া করে ৫ জনকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছে।
হামলার ঘটনায় আহত পুলিশ সদস্যরা হলেন, এসআই মিজানুর রহমান, এসআই মোহাম্মদ আল ফোরকান, কনস্টেবল ছদরুল আমিন ও রাজু আহমদ। আহত চার পুলিশের মধ্যে তিনজন প্রাথমিক চিকিৎসা নিলেও মাথায় গুরুতর আহত হওয়ায় ছদরুল আমিনকে চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
এদিকে গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, চকরিয়া উপজেলার সাহারবিল ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কোরালখালী এলাকার আরমান হোসেন, মোস্তফা কামাল, বিএমচর এলাকার নুরশেদুল ইসলাম ছোটন, শাহপুরা এলাকার জয়নাল উদ্দিন ও আমির হোসেন।
সাহারবিল ইউনিয়নের আলোচিত ইউপি চেয়ারম্যান নবী হোছাইনের বিরুদ্ধে চকরিয়াসহ বিভিন্ন থানায় গরু চুরিসহ ১৩টি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে দুই মামলায় তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রয়েছে।
এ হামলার ঘটনায় ২৪ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতসহ ৮৪ জনকে আসামি করে চকরিয়া থানার এসআই মিজানুর রহমান বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।
চকরিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শেখ মোহাম্মদ আলী এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, সাহারবিল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নবী হোছাইনের বিরুদ্ধে ১৩টি মামলা থাকলেও দুটি মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি রয়েছে। আসামি বাড়িতে অবস্থান করছে জানতে পেরে থানা, ফাঁড়ি ও বিটের পুলিশের একাধিক টিম নবী হোছাইনকে গ্রেপ্তারে অভিযান চালায়। এ সময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে নবী হোছাইন তার সন্ত্রাসীদের দিয়ে কাজে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করে। একপর্যায়ে সন্ত্রাসীরা নবী হোছাইনের বাড়ির ছাদ থেকে পুলিশের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে। পুলিশ জানমালের ক্ষতি হবে চিন্তা করে পিছে চলে আসে এবং থানা থেকে অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে পাঁচ সন্ত্রাসীকে গ্রেপ্তার করে। তবে পরোয়ানাভুক্ত আসামি নবী হোছাইন পালিয়ে যাওয়ায় তাকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি।
ওসি আরও বলেন, পরোয়ানাভুক্ত আসামিসহ পুলিশের কাজে বাধা ও হামলার অভিযোগে ২৪ জনের নাম উল্লেখপূর্বক অজ্ঞাতপরিচয় আরও ৫০-৬০ জনকে আসামি করে থানায় মামলা করা হয়েছে। ঘটনায় জড়িত আসামিদের গ্রেপ্তার করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মাঠে কাজ করছে বলে তিনি জানান।