স্কুলগুলো যখন করোনার ক্ষতি পুষিয়ে ওঠার চিন্তায়, তখন আবারও দেশজুড়ে করোনার ভয়াল থাবা। স্কুলগুলোতে করোনা সংক্রমণের ভয় ছড়িয়ে পড়েছে। এমন পরিস্থিতিতে স্কুলগুলোতে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতির হার কমছে।
যদিও শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ না করে বরং ১২-১৮ বছর বয়সী শিক্ষার্থীদের দ্রুত টিকার আওতায় এনে স্কুল খোলা রাখার পরিকল্পনার কথা বলছেন।
শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কমে যাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে রাজধানীর তেজগাঁও সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষিকা নাহিদ সুলতানা বলেন, করোনা সংক্রমণের ভয়ে আমাদের স্কুলে ছাত্রীদের অংশগ্রহণ কমেছে।
তিনি বলেন, অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের আসতে দিচ্ছেন না। বিশেষ করে দশম ও এসএসসি পরীক্ষার্থী, এই দুই ক্লাসে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি অনেক কমে গেছে। তবে শিক্ষার্থীদের বেশিরভাগই টিকার আওতায় এসেছেন বলে জানান তিনি।
সিদ্ধেশ্বরী উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহাব উদ্দিন মোল্লা নিজেই করোনায় আক্রান্ত হয়ে হোম আইসোলেশনে রয়েছেন।
তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমাদের স্কুলে চার হাজার ছাত্রী। তার মধ্যে প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের চারটি ক্লাসে আট-দশটি শাখায় ৬০০ শিক্ষার্থীর নিয়মিত ক্লাস চলছে। জানুয়ারির শুরুর দিকে ৯০-৯৫ শতাংশ ছাত্রী উপস্থিত থাকলেও করোনা সংক্রমণ বাড়ার পর এখন ৫-১০ শতাংশ ছাত্রীর উপস্থিতি কমে গেছে।
গত বছরের সেপ্টেম্বরে দেড় বছরের অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয় সরকার /ছবি- সংগৃহীত
তেজগাঁও সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা শাহরীন খান রূপা বলেন, আমাদের স্কুলে শিক্ষার্থীদের ক্লাসে আসার সংখ্যা কমেছে। দশম শ্রেণির ৬০ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ১৩ জন টানা তিনদিন আসেনি। মূল কথা হলো, অনেক শিক্ষকও করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন। আমাদের প্রতিষ্ঠানের চারজন শিক্ষক করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এছাড়াও বেশ কয়েকজনের করোনার উপসর্গ রয়েছে। এটা নিয়েই শঙ্কিত আমরা।
গবর্নমেন্ট ল্যাবরেটরি হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো. আবু সাইদ ভুঁইয়া বলেন, নিচের ক্লাসগুলোতে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি ঠিকই আছে। তবে ওপরের ক্লাসগুলোতে শিক্ষার্থী কমেছে।
করোনা সংক্রমণের হার নিম্নগামী হওয়ায় গত বছরের সেপ্টেম্বরে দেড় বছরের অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয় সরকার। এরপর স্কুলগুলোতে সশরীরে ক্লাস-পরীক্ষা হয়।
তারপরও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা রাখতে বদ্ধ পরিকর শিক্ষা মন্ত্রণালয়। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি মনিটরিংয়ের অংশ হিসেবে প্রতিদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের করোনা সংক্রান্ত তথ্য মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতরে পাঠানোর নির্দেশনা পাঠানো হয়েছে স্কুলগুলোতে। এ ইস্যুতে দুয়েকদিনের মধ্যে করোনা সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির সঙ্গে আবারও বৈঠকে বসবে মন্ত্রণালয়।