কক্সবাজার আদালতে বর্তমানে ৮২ হাজার ৭৯৮টি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে দেওয়ানি ২৬ হাজার ৬২টি এবং ফৌজদারি মামলার সংখ্যা ৫৬ হাজার ৭৩৬টি। এতে শুধু মাদকের মামলা রয়েছে ২৫ হাজারের ওপরে। শতাংশের বিচারে এটি প্রায় ৩০ শতাংশ। মামলা নিষ্পত্তির হিসেবে গেল সেপ্টেম্বরে চট্টগ্রাম বিভাগে প্রথম এবং নভেম্বর পর্যন্ত সারাদেশে এগিয়ে রয়েছে কক্সবাজার আদালত। আর মামলা নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে বলিষ্ট ভূমিকা পালন করায় কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) এডভোকেট ফরিদুল আলমকে সম্মাননা প্রদান করেছেন জেলা প্রশাসন। তাকে উপহার হিসেবে দিয়েছে ক্রেস্ট ও মূল্যবান বই। রবিবার (১১ ডিসেম্বর) দুপুরে জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় আনুষ্ঠানিকভাবে ফরিদুল আলমকে এই সম্মাননা দেওয়া হয়। এ সময় বিদায়ী জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ, নবাগত জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক এডভোকেট সিরাজুল মোস্তফা, পুলিশ সুপার মো. মাহফুজুল ইসলাম, বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল আবছার, সিভিল সার্জন ডা. মাহবুবুর রহমানসহ বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। সম্মাননা প্রপ্তিতে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে এডভোকেট ফরিদুল আলম বলেন, মামলা নিষ্পত্তি ও আদালতে গরীব অসহায় মানুষকে যে পরিমাণ সেবা দিয়েছি তা বিগত ৪০ বছরের রেকর্ড। মামলা কিভাবে দ্রুত নিষ্পত্তি করা যায়, সে জন্য দিনরাত পরিশ্রম করেছি। সবার সঙ্গে সমন্বয় রেখেছি। তার স্বীকৃতি প্রদান করেছে প্রশাসন। এতে কাজের গতি আরো বেড়ে যাবে। তিনি বলেন, ২০১৯ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর পাবলিক প্রসিকিউটর হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করি। এর পর আদালতে মামলার জট কমাতে কার্যকর সিদ্ধান্ত নিই। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে গুরুত্বপূর্ণ মামলাসমূহ চিহ্নিত করে সামনে নিয়ে আসা হয়। পিপি ফরিদ বলেন, শুধু গত এক মাসে ১ হাজার ৩৬৬টি মামলা নিষ্পত্তি করা হয়েছে। দেশব্যাপী আলোচিত সিনহা হত্যা মামলা, আত্মাস্বীকৃত ১০১ জন ইয়াবা কারবারির মামলার রায় আমার দায়িত্বকালেই সম্পন্ন হয়েছে। আরো বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ মামলার রায় অপেক্ষমান। মামলা নিষ্পত্তিতে সর্বোচ্চ ভূমিকা রাখায় জেলার আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় আমাকে সম্মাননা জানানো হয়েছে। এ ছাড়াও কক্সবাজার সফরকালে প্রধান বিচারপতিও আমাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। ফরিদুল আলম বলেন, বিচারপ্রার্থীর সেবা নিশ্চিত ও মামলার নিষ্পত্তির পরিমাণ বাড়াতে হলে পর্যাপ্ত বিচারক ও আইনজীবীদের আন্তরিকতা দরকার। দ্রুত মামালার নিষ্পত্তিতে বাদী ও সাক্ষীর ভূমিকাও কম নয়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সাক্ষীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারলে মামলা নিষ্পত্তির সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে। তিনি বলেন, সঠিক সময়ে সাক্ষী হাজির না থাকলে মামলায় দীর্ঘসুত্রিতা সৃষ্টি হয়। তাই যথাসময়ে সাক্ষীর উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে। এক্ষেত্রে সাক্ষীর মোবাইল নাম্বার সংরক্ষণ করা আবশ্যক।