আজ রবিবার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১

ওয়ানস্টপ সার্ভিস চান পর্যটন খাতে বিনিয়োগকারীরা

ইমাম খাইর, কক্সবাজার | প্রকাশের সময় : মঙ্গলবার ২৯ নভেম্বর ২০২২ ০৬:০৯:০০ অপরাহ্ন | কক্সবাজার প্রতিদিন

 

কক্সবাজারকে এগিয়ে নিতে গণমাধ্যমের সহযোগিতা চাইলেন পর্যটন ব্যবসায়ীরা। সেই সাথে সরকারী প্রতিষ্ঠানসমূহ থেকে দ্রুত সময়ে সেবা পেতে "ওয়ান স্টপ সার্ভিস" কামনা করেছেন তারা। তারা বলছেন, হোটেল রেস্টুরেন্ট মালিকসহ পর্যটন শিল্পে যারা বিনিয়োগ করেছে তাদের লাইসেন্স পেতে এবং প্রতি বছর নবায়ন করতে বহু দফতরে যেতে হয়। এতে তারা প্রতিনিয়ত হয়রানীর শিকার হচ্ছে। এই শিল্পে বিনিয়োগকারিদের জন্য ওয়ানস্টপ সার্ভিসের জন্য আমরা দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়ে আসছি। দাবি এখনও বাস্তবায়ন হয়নি। এতে পর্যটন শিল্প বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। কক্সবাজারের পর্যটন শিল্প নিয়ে বিশেষ মহলের ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন ব্যবসায়ীরা এ দাবির কথা জানান। মঙ্গলবার (২৯ নভেম্বর) দুপুরে শহরের একটি অভিজাত হোটেলের কনফারেন্স হলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন বলা হয়, কক্সবাজারের পর্যটন শিল্প বাচঁলে দেশ সমৃদ্ধির পথে যাবে। অথচ কিছু লোক দেশের এই উন্নয়ন চায়না। তারা নেতিবাচক ও অসত্য প্রচারণা চালায়। এই ধরণের অপপ্রচার পর্যটন শিল্পের উন্নয়ন, অগ্রগতি, সাফল্য, সমৃদ্ধির পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। হোটেল মোটেল ওনার্স এসোসিয়েশন, বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতি, হোটেল মোটেল গেস্ট হাউজ মালিক সমিতি ও মেরিন ড্রাইভ হোটেল রিসোর্ট মালিক সমিতির যৌথভাবে সংবাদ সম্মেলনটি আয়োজন করে। আবাসিক হোটেল ও রেস্তুরাঁসহ পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে জেলা প্রশাসন, পরিবেশ, ফায়ার সার্ভিসসহ অন্তত ১৭টি দপ্তরের ছাড়পত্র ও সনদ আবশ্যক। তার জন্য সংশ্লিষ্ট অফিসে গিয়ে দিনের পর দিন ধর্ণা দিতে হয়। তাতে হয়রানি ও ভোগান্তির শিকার হন ব্যবসায়ীরা। এসব প্রতিষ্ঠানে "ওয়ান স্টপ সার্ভিস" চালু করা গেলে সেবার পথ অনেকটা সুগম হবে। বাড়বে পর্যটক সেবার মান। পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের বক্তব্য মতে, বিনোদন, থাকা, খাওয়া ও নিরাপত্তা বিবেচনায় দেশের যে কোন জায়গার চেয়ে ভ্রমণের নিরাপদ স্থান কক্সবাজার। পরিবেশ রক্ষা করে পর্যটন শিল্পের প্রসার ঘটানো যায়। দেশের স্বার্থেই কক্সবাজারের পর্যটন শিল্পকে এগিয়ে নিতে হবে। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য দেন বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতি কক্সবাজার জেলা সভাপতি নইমুল হক চৌধুরী টুটুল। তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দৃষ্টি কক্সবাজারে। আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর, শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম, মহেশখালী কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র, মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দর, সাবরাং ইকো ট্যুরিজম পার্ক, পেঁচারদ্বীপ সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউট, রামু বিকেএসপি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, খুরুশকুল আশ্রয়ণ প্রকল্পসহ এখানে ১২টি মেগা প্রকল্প চলমান। আধুনিক পর্যটন নগরীর জন্য কাজ করছে সরকার। পর্যটনের ইতিবাচক দিক বেশি প্রচার এবং নেতিবাচক প্রভাব পড়ে এমন সংবাদ বর্জন করা উচিত। তিনি আরো বলেন, কক্সবাজারকে ঢেলে সাজাতে লক্ষ কোটি টাকা ব্যয়ে উন্নয়ন মহাপরিকল্পনা করছে সরকার। স্বার্থান্বেষী মহলের কারণে পর্যটন শিল্প নানাবিধ সংকট ও টানাপোড়েনের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। পর্যটকরা কক্সবাজার বিমুখ হচ্ছে। বেকার হওয়ার আশঙ্কায় এ শিল্পে জড়িত দুই লাখ মানুষ। পর্যটনকে বাঁচাতে বিশ্ব দরবারে কক্সবাজারকে প্রমোট করতে গণমাধ্যমকর্মীদের সহযোগিতা চান নইমুল হক চৌধুরী টুটুল। হোটেল মোটেল ওনার্স এসোসিয়েশনের সভাপতি শাহ আলম চৌধুরীর সভাপতিত্বে শুরুতে স্বাগত বক্তব্য দেন হোটেল মোটেল গেস্ট হাউজ মালিক সমিতির সভাপতি আলহাজ্ব আবুল কাশেম সিকদার। তিনি বলেন, কক্সবাজার আমাদের সম্পদ, অহংকার। সেখানেই আমাদের জীবন জীবিকা। পর্যটক আসলে সবার লাভ। সবমহলের সমন্বয়ে কক্সবাজারকে এগিয়ে নিতে হবে। হোটেল মোটেল গেস্ট হাউজ মালিক সমিতির সাধারণ সেলিম নেওয়াজের সঞ্চালনায় সংবাদ সম্মেলনে সিনিয়র সহ-সভাপতি সরওয়ার কামাল, মেরিন ড্রাইভ হোটেল রিসোর্ট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোঃ মুকিম খান, বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতি কক্সবাজার জেলার সিনিয়র সহসভাপতি মোঃ আলী, সহসভাপতি কামরুল ইসলাম, কাশেম আলী, মোঃ রুবেল উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক রাশেদুল ইসলাম ডালিমসহ পর্যটন সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে কুরআন তিলাওয়াত করেন নিরিবিলি রেস্তোরাঁর ব্যবস্থাপক হাফেজ মাওলানা জামাল হোসাইন।