কক্সবাজারের চকোরিয়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় ৫ ভাই নিহতের ঘটনায় গুরুতর আহত হওয়া আরেক ভাই ভর্তি আছেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে। হাসপাতালের ২৮ নং ওয়ার্ডে ভর্তি থাকা ওই ভাইয়ের নাম রক্তিম শীল। তার অবস্থাও খারাপ। ৮ ভাই-বোনের মধ্যে তিনি ৫ম। নির্মম সড়ক দুর্ঘটনায় পাঁচ ভাই মারা গেলেও এখনো সে কথা জানেন না তিনি।
এক সপ্তাহ আগে বাবার মৃত্যুর পর আজ সকালে ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠানের জন্য সাত ভাই ও এক বোন স্থানীয় একটি মন্দিরে যান। সেখান থেকে আট ভাই বোন একসঙ্গে বাড়ি ফেরার পথে পিকআপের চাপায় ৫ জন মারা যান।
মঙ্গলবার (৮ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে আটটার দিকে রক্তিমের নিকট আত্মীয় (ভায়রা ভাই) আকাশ দাশ মোবাইলে বলেন, এখনও রক্তিম দাশের জ্ঞান ফেরেনি। তার অবস্থা অবনতির দিকে। কিছুক্ষণ আগে সার্জারি ওয়ার্ডে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, রক্তিমের ৫ বছর বয়সী একটা ছেলে আছে। সেও হাসপাতালে বাবার সিটের পাশে বসে বাবার সুস্থতার অপেক্ষায় আছে। গুরুতর আহত রক্তিম শীলের শ্যালক অনুপ শর্মা বলেন, আমি এটাকে হত্যাকাণ্ড বলব। এ ঘটনায় জড়িতদের ফাঁসি চাই।
কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চকরিয়ার ডুলাহাজরা মালুমঘাট এলাকায় মঙ্গলবার (৮ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৮টার দিকে দ্রুতগামী পিকআপ ভ্যানের চাপায় একই পরিবারের পাঁচ ভাই নিহত হয়।
নিহতরা হলেন- চকরিয়ার ডুলাহাজরা ইউনিয়নের সগীর শাহ কাটা গ্রামের মৃত সুরুজ চন্দ্র শীলের ছেলে নিরুপম শীল, অনুপম শীল, দীপক শীল, চম্পক শীল ও স্মরণ সুশীল। এরমধ্যে ঘটনাস্থলেই মারা যান চারজন৷ আর স্মরণ সুশীলকে আহত অবস্থায় চমেক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
চমেকের দায়িত্বরত চিকিৎসক মাসুদ কবির সাংবাদিকদের বলেন, কক্সবাজারে সরকার দুর্ঘটনায় আহত দুইজনকে হাসপাতালে আনা হয়েছিল। তারমধ্যে একটা ভাই মঙ্গলবার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়। আর রক্তিম নামে একজনের চিকিৎসা চলছে। রক্তিম মাথা ও শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাত পেয়েছেন।
ডুলাহাজরা ইউপির চেয়ারম্যান আদর জানান, নিহত ৫ ভাই আমার ইউনিয়নের। তাদের এই মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় পুরো ইউনিয়নে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। এক সপ্তাহ আগে তাদের বাবা মারা যায়। আজ তারা মন্দিরে বাবার নামে পূজা দিতে গিয়ে মারা গেল।