উপকূলীয় এলাকায় সুপেয় পানি সংকট নিরসনে ভূগর্ভস্থ পানির ব্যবহার বন্ধ করা, এলাকাভিত্তিক বড় বড় পুকুর, খাল, জলাশয় খনন করে তাতে বৃষ্টির পানি ধরে রাখার ব্যবস্থা করা, খাসজমিতে মিঠা পানির আধার তৈরি করা এবং উপকূলে সুপেয় পানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে জাতীয় বাজেট বৃদ্ধি করার দাবি জানিয়েছে কুতুবদিয়া উপজেলার যুব, নারী, পুরুষ, পানি সংকটে ক্ষতিগ্রস্থ জনগণ,সাংবাদিক সহ বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষ।
মঙ্গলবার (১৬ আগষ্ট) সকাল ১০ টায় কুতুবদিয়া উপজেলা গেইটে বিনামূল্যে নিরাপদ ও পর্যাপ্ত সুপেয় পানি প্রাপ্তি আমার অধিকার’ প্রতিপাদ্য নিয়ে পার্টিসিপেটরি রিসার্চ অ্যান্ড অ্যাকশান নেটওয়ার্ক- প্রান, কোস্ট ফাউন্ডেশন এবং একশনএইড বাংলাদেশ আয়োজিত উপকূলজুড়ে পানি অধিকার প্রচারাভিযানে অংশগ্রহণকারীরা এই দাবি জানান।
মানববন্ধনে, কুতুবদিয়া আদর্শ স্কুল এন্ড কলেজ এর সহকারি অধ্যক্ষ মো: ইউনুছ, কুতুবদিয়া প্রেসক্লাবের সাধারন সম্পাদক হাসান কুতুবী, আজকের পত্রিকার কুতুবদিয়া প্রতিনিধি আবুল কাশেম, উপজেলা মৎস্যজীবী সমিতি’র সভাপতি আবুল কালাম, সাধারন সম্পাদক সুকলাল দাস, কোস্ট ফাউন্ডেশনের সিনিয়র সমন্বয়কারী মিজানুর রহমান, টেকন্যিকাল অফিসার শাহাদাৎ হোসেন এছাড়াও আরো উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে আগত ক্ষতিগ্রস্থ যুব,নারী ও পুরষ, সাংবাদিক এবং নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিবৃন্দ।
বক্তারা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের হুমকির মুখে উপকূলীয় উপজেলা কুতুবদিয়া, অন্যান্য সমস্যার মধ্যে পানির সংকট দিন দিন ভয়াবহ আকার ধারন করছে। কুতুবদিয়া উপজেলার উত্তর ধূরুং, দক্ষিণ ধূরুং, লেমশীখালী, কৈয়ারবিলসহ বড়ঘোপ ইউনিয়নের অনেক এলাকার টিউবওয়েল থেকে পানি পাওয়া যাচ্ছে না। বিশেষ করে উত্তর ও দক্ষিণ ধূরুং ও লেমশীখালীর বিভিন্ন এলাকায় এ সমস্যা বেশি। জেলে পল্লীগুলোতে সংকট আরো প্রকট। টেকসই বেড়িবাঁধ না থাকায় দুর্যোগের সময় জোয়ার ও জলোচ্ছাসের পানিতে বসত ভিটা সহ পুকুর লবণাক্ত পানিতে তলিয়ে যায়। তাছাড়া অমাবস্যা ও পূর্ণিমার জোয়ারের সময় সাগরের লোনাপানিতে বেশ কয়েকটি ইউনিয়ন নিয়মিত প্লাবিত হচ্ছে। এছারা বছরের দীর্ঘ সময় কিছু পুকুরে সামান্য মিঠা পানি থাকলেও শুকিয়ে যাওয়ার কারণে তা ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। লবনাক্ততা বৃদ্ধির সাথে সাথে এখানে বাড়ছে স্থাস্থ্যগত ঝুঁকি, যার প্রধান শিকার নারী,শিশু, কিশোরী ও বয়স্করা। কুতুবদিয়া উপজেলায় ডায়রিয়া, পেটব্যথাসহ নানাবিধ পানিবাহিত রোগীর সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।
বক্তারা আরো বলেন দ্বীপে সুপেয় পানির সংকট তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে, এখন থেকে যথাযথ উদ্যোগ না নিলে অদূর ভবিষ্যতে পরিবর্তিত আবহাওয়ার কারণে রোগব্যাধি আরো বৃদ্ধির আশংকা রয়েছে। তাই জরুরিভাবে এখানে সুপেয় পানির সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। স্থানীয় জনগোষ্ঠীর সুপেয় পানি সংকটকে জরুরি বিবেচনায় নিয়ে নিরবচ্ছিন্ন পানি সরবরাহ তথা সুপেয় পানি অধিকার নিশ্চিত করতে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণের উপর বক্তারা গুরুত্বারোপ করেন। উক্ত মানববন্ধনে প্রায় কয়েক শতাধিক অংশগ্রহণকারী অংশগ্রহণ করেন।