রুশ সেনারা মঙ্গলবার আবারও ইউক্রেনের জ্বালানি স্থাপনার ওপর হামলা চালিয়েছে। এ হামলায় রাজধানী কিয়েভ ও অন্যান্য শহরের বিদ্যুৎ ও পানি সরবরাহে বিঘ্ন ঘটেছে।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের দপ্তরের একজন কর্মকর্তা বলেছেন, ইউক্রেনের জ্বালানি পরিস্থিতি এখন বিপর্যস্ত।
কৌঁসুলিরা জানিয়েছেন কিয়েভে চালানো মঙ্গলবারের হামলায় দুইজন নিহত হয়েছেন। দিনিপ্রো নদীর পাশে অবস্থিত একটি পাওয়ার স্টেশন থেকে ধোঁয়ার কুণ্ডলি বের হতে দেখা যায়।
কিয়েভে পশ্চিম দিকে অবস্থিত ঝাইতোমিরে বিদ্যুৎ ও পানি সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেছে। দিনিপ্রোতে দুটি স্থাপনা ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
প্রেসিডেন্ট দপ্তরের উপপ্রধান কাইরাইলো তাইমোশেঙ্কো বলেছেন, সবার প্রস্তুত থাকতে হবে। প্রথমত, বিদ্যুৎ সাশ্রয় করতে হবে, দ্বিতীয়ত, যদি হামলা অব্যাহত থাকে তাহলে ব্ল্যাকআউট অব্যাহত থাকবে।
তিনি আরও বলেছেন, একটি কঠিন শীতের জন্য সবাইকে প্রস্তুত থাকতে হবে।
মঙ্গলবার প্রেসিডেন্ট ভলোদমির জেলেনস্কি জানান, গত ৮ দিনে ইউক্রেনের ৩০ ভাগ জ্বালানি স্থাপনা ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। এ কারণে পুরো দেশজুড়ে বড় ধরনের ব্ল্যাকআউট দেখা দিয়েছে।
ইউক্রেনের জ্বালানি প্রতিষ্ঠান ডিটিইকে বলেছে, রাশিয়ার গোলাবর্ষণে তাদের দুটি থার্মাল পাওয়ার স্টেশন ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাদের একজন কর্মী নিহত এবং ছয়জন আহত হয়েছেন।
সাম্প্রতিক সময়ে যুদ্ধের সম্মুখভাগে আক্রমণ বাদ দিয়ে রাশিয়া ইউক্রেনের জ্বালানি স্থাপনাগুলোর ওপর বড় ধরনের হামলা চালানো শুরু করেছে। কর্মকর্তারা এগুলো দ্রুত ঠিক করার চেষ্টা করছেন। কিন্তু শীতের আগে এসব আক্রমণ, শঙ্কা তৈরি করেছে কিভাবে তাদের সিস্টেম এর জবাব দেবে।
মাত্র ২৪ ঘণ্টা আগে কামিকাজে ড্রোন ব্যবহার করে কিয়েভে হামলার পরই নতুন হামলার ঘটনা ঘটেছে। কামিকাজে ড্রোন হামলায় কিয়েভ এবং সামিতে অন্তত ৯ জন নিহত হয়েছেন। হামলায় কয়েকশ গ্রাম এবং শহরে বিদ্যুৎ বিভ্রাট দেখা দিয়েছে।
এটি নিশ্চিত নয় মঙ্গলবারের হামলায় কতগুলো ড্রোন ব্যবহার করা হয়েছে। ইউক্রেন জানিয়েছে, রুশ সেনারা মিসাইল এবং একটি এস-৩০০ বিমান বিধ্বংসী মিসাইল ছুঁড়েছে, মাইকোলাইভে রাতব্যাপী হামলা চালানো হয়, এতে একজন নিহত হন। শহরটির ফ্লাওয়ার মার্কেটেও হামলা চালানো হয়।
ইউক্রেনের কিছু শহরে, সাধারণ ইউক্রেনীয়রা পাওয়ার জেনারেটর এবং গ্যাস বার্নাস কেনা শুরু করেছে। এরমধ্যে দেশব্যাপী সাধারণ মানুষকে জ্বালানি ব্যবহারে সাশ্রয়ী হতে বলা হয়েছে।
ইউক্রেনের এমপি লেসিয়া ভাসেলেঙ্কো গণমাধ্যম বিবিসিকে বলেছেন, আমরা ধারণা করছি রাশিয়া জ্বালানি ও বেসামরিক স্থাপনার ওপর হামলা বাড়াবে এবং শরৎের আগে শহরে যুদ্ধ বাড়াবে। আর আমরা এখন এই পরিস্থিতিতেই আছি।
যুক্তরাজ্যের গোয়েন্দারা তাদের সর্বশেষ তথ্যে জানিয়েছে, যুদ্ধক্ষেত্রে ব্যর্থ হওয়ায় রাশিয়া সামরিক স্থাপনার পাশাপাশি বেসামরিক স্থাপনার ওপরও হামলা চালাবে।