দেশের সবচেয়ে বড় রাজস্ব আহরণকারী প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস ২০২২-২৩ অর্থবছরের ২৪ মে পর্যন্ত ৫৩ হাজার ৩৫৪ কোটি টাকার বেশি রাজস্ব আদায় করেছে। এ সময়ে প্রতিষ্ঠানটির রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৬৬ হাজার ২২৫ কোটি টাকার বেশি।
ঘাটতি আছে ১২ হাজার ৮৬৭ কোটি টাকার বেশি, ১৯ দশমিক ৪৩ শতাংশ। তবে এর আগের অর্থবছরে এ সময়ে আদায় হয়েছিল ৫১ হাজার ২৩৪ কোটি ৪১ লাখ টাকা।
এ হিসাবে এবার বেশি আদায় হয়েছে ২ হাজার ১২৩ কোটি ৭৯ টাকা, ৪ দশমিক ১৫ শতাংশ।
সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের চলতি অর্থবছরে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৭৪ হাজার ২০৬ কোটি টাকা। গত অর্থবছরে রাজস্ব আদায় হয়েছিল ৫৯ হাজার কোটি ১৫৯ টাকা, লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৬৪ হাজার ৭৫ কোটি টাকা। মূলত দেশের প্রধান সমুদ্রবন্দর কেন্দ্রিক আমদানি চালানের ওপর রাজস্ব আহরণ করে কাস্টম হাউস। দেশের আমদানি-রপ্তানির ৯২ শতাংশ এ বন্দর দিয়ে হয়ে থাকে।
রাজস্ব বাড়াতে কাস্টম হাউস বকেয়া রাজস্ব আদায় করছে। গত মাসে আমরা ১৮ কোটি টাকা বকেয়া আদায় করেছি। আদালতে বিচারাধীন মামলাগুলো দ্রুত নিষ্পত্তি করে সরকারের পক্ষে রাজস্ব আহরণের উদ্যোগ নিয়েছে। পোস্ট ক্লিয়ারেন্স অডিট (পিসিএ) জোরদার করা হচ্ছে।
রাজস্ব আহরণে ঘাটতির বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের কমিশনার মোহাম্মদ ফাইজুর রহমান বলেন, বাণিজ্যিক পণ্য বেশি আসলে রাজস্ব বাড়ে। আমাদের মনে হচ্ছে মাঝখানে কিছু দিন এ খাতে এলসি কম হয়েছে। পলিসির কারণে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের শুল্ক কম। গত এপ্রিলের কথাই যদি বলি আগের বছরের এপ্রিলের পণ্যের ভলিয়্যুম কমেছে ১৮ শতাংশ, বন্ড পণ্য আমদানি কমেছে ১৭ শতাংশ, বিল অব এন্ট্রি কমেছে ১৮ শতাংশ। গাড়ি, স্ক্র্যাপ জাহাজ, ক্লিংকার, চিনি, ভোজ্যতেল, জ্বালানি তেল ইত্যাদি বেশি রাজস্বের ২০টি পণ্যের তালিকায় গত এপ্রিলে ১ হাজার ১৯ কোটি টাকা রাজস্ব কম আদায় হয়েছে।
তিনি বলেন, পেট্রোবাংলার এনার্জি খাতে এখনো রাজস্ব জমা দেয়নি। এটা পেলে আমাদের রাজস্ব গত বছরের চেয়ে ২০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হতো।
এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, রাজস্ব আহরণের পাশাপাশি ট্রেড ফ্যাসিলিটি বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছি। টাইম রিলিজ স্টাডি (টিআরএস) থেকে জানা গেছে ৭২ শতাংশ সময়ক্ষেপণ হয় আইজিএম থেকে বিল অব এন্ট্রি দাখিল পর্যন্ত। তাই আমরা সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টদের তাগিদ দিচ্ছি দ্রুত বিল অব এন্ট্রি দাখিল করার জন্য। পাশাপাশি নিলাম, ধ্বংস কার্যক্রম জোরদার করেছি। যদিও ধ্বংস কার্যক্রমে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংস্থার আন্তরিকতা দরকার। সবাই মিলে আমাদের ঝুঁকিপূর্ণ ও বন্দরের জঞ্জাল পরিষ্কার করতে হবে। সম্প্রতি আমরা কিছু রাসায়নিক পণ্য সিলেটের একটি সিমেন্ট কারখানায় নিয়ে ধ্বংস করেছি।
কাস্টম হাউসের পরীক্ষাগার নিয়ে ব্যবহারকারীদের বিভিন্ন সমস্যা প্রসঙ্গে কমিশনার বলেন, পরীক্ষাগারের মূল সমস্যা জনবল সংকট। আমরা চাইলে টেকনিশিয়ান নিয়োগ দিতে পারি না। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের অর্গানোগ্রাম পরিবর্তন হচ্ছে। এরপর নিয়োগ দেবে। আমরা বেসিক পণ্য পরীক্ষা করছি। বাকি পণ্যগুলো বিসিএসআইআর, চুয়েট, বিএসটিআইসহ সরকারি অনেক ল্যাব আছে, সেখানে করাতে বলেছি।