বোয়ালখালী পৌর সদরের গোমদন্ডী পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানি করার অভিযোগের তদন্তে সত্যতা পাওয়া গেছে। অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সুপারিশ করা হয় মন্ত্রণালয়ে। এরপরও বহাল তবিয়তে রয়েছেন অভিযুক্ত শিক্ষক।
জানা গেছে, গোমদন্ডী পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের ভোকেশনাল বিভাগের নবম শ্রেণির (ইলেকট্রিক্যাল) এক ছাত্রকে কোচিং পড়ানোর নাম করে শিক্ষক বিপুল বড়ুয়া যৌন হয়রানি করেন। এ নিয়ে স্কুলের অন্যান্য শিক্ষার্থীরা ইভটিজিং করলে ঘটনার শিকার ছাত্রটি স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দেয়। পরবর্তীতে ছাত্রের বাবা বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকসহ অন্যান্য শিক্ষকদের জানালে তারা অভয় দিলে সে স্কুলে যেতে থাকে। এ বিষয়ে গত ২০২২ সালের ২০ নভেম্বর শিক্ষক বিপুল বড়ুয়ার বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন ওই শিক্ষার্থীর মা। অভিযোগ তদন্তে সত্যতা পাওয়ায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ মামুন অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের কাছে চলতি বছরের গত ৫ এপ্রিল সুপারিশ করেছেন। এর আলোকে গত ৭ মে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান অবগতি ও পরবর্তী কার্যক্রম গ্রহণের জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিবের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন প্রেরণ করেন।
২০২২ সালের ২০ নভেম্বর শিক্ষার্থীর মায়ের অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, ঘটনার বিষয়ে প্রধান শিক্ষককে জানানোর পর শিক্ষক বিপুল বড়ুয়া তার ভাই পুলিশের এসআই হওয়ার সুবাদে থানার তিনজন পুলিশ সদস্যসহ কতিপয় ব্যক্তিদের শিক্ষার্থী ও অভিভাবককের কাছে পাঠিয়েছিলেন। এর মধ্যে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অভিযোগের প্রেক্ষিতে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন এবং ঘটনার প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় বিপুল বড়ুয়াকে সাময়িক বরখাস্তসহ বেতনভাতাদি স্থগিত রেখেছিলেন। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার সমন্বয়ে গঠিত তদন্ত কমিটি ঘটনার সত্যতা পেয়ে বিগত বছরের ১৯ ডিসেম্বর বিপুল বড়ুয়ার বিরুদ্ধে একটি তদন্ত প্রতিবেদন উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে দাখিল করেন। তবে গত ৮ মে বিপুল বড়ুয়ার এক আবেদনের প্রেক্ষিতে চট্টগ্রাম মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের বিদ্যালয় পরিদর্শক ড. বিপ্লব গাঙ্গগুলী স্বাক্ষরিত এক পত্রে বেতন-ভাতাদি বিধি মোতাবেক প্রদানের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রধান শিক্ষককে বলা হয়। ফলে বহাল তবিয়তে রয়ে যান অভিযুক্ত শিক্ষক বিপুল বড়ুয়া।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ মামুন বলেন, শিক্ষার্থীর মায়ের অভিযোগ পাওয়ার পর বিষয়টি তদন্ত করা হয়। এতে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায় অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে। এ বিষয়ে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মহোদয়ের কাছে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য লিখিতভাবে তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে।
চট্টগ্রাম মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসার মুস্তফা কামরুল আখতার বলেন,তিনি একটি মিটিংয়ে আছেন। চট্টগ্রাম মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের বিদ্যালয় পরিদর্শক ড. বিপ্লব গাঙ্গগুলীর সাথে এ বিষয়ে আলোচনা করবেন।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামানের কাছে এ বিষয়ে জানতে ফোন করা হলে তাঁর মুঠোফোনে সংযোগ পাওয়া না যাওয়ায় বক্তব্য জানা যায়নি।