আজ বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ই বৈশাখ ১৪৩১

প্রাকৃতিক দুর্যোগে বাংলাদেশে বেড়েছে মানবপাচার : জাতিসংঘ

নিজস্ব প্রতিবেদক : | প্রকাশের সময় : মঙ্গলবার ২৪ জানুয়ারী ২০২৩ ০২:৪৩:০০ অপরাহ্ন | দেশ প্রান্তর

বিধ্বংসী ঘূর্ণিঝড় আর টাইফুনের আঘাতে লাখ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হওয়ার পর বাংলাদেশ এবং ফিলিপাইনে মানবপাচারের ঘটনা বৃদ্ধি পেয়েছে। মঙ্গলবার জাতিসংঘের মাদক ও অপরাধবিষয়ক সংস্থার (ইউএনওডিসি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

সংস্থাটি বলেছে, মানবপাচারের অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে আর এই বিষয়ে প্রমাণও পাওয়া যাচ্ছে, কারণ সংঘবদ্ধ অপরাধী চক্র ক্রমবর্ধমান বাস্তুচ্যুত মানুষকে শোষণ করছে।

সংস্থাটি বলেছে, ‘জলবায়ু পরিবর্তন মানবপাচারের ঝুঁকি ক্রমবর্ধমান হারে বৃদ্ধি করছে।’ গ্লোবাল ট্রাফিকিং অন পারসন রিপোর্ট-২০২২ শীর্ষক প্রতিবেদনে জাতিসংঘের মাদকবিষয়ক এই সংস্থা বলেছে, মানবপাচারের ঘটনায় জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবের পদ্ধতিগত বৈশ্বিক বিশ্লেষণের ঘাটতি থাকলেও বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের স্থানীয় পর্যায়ের গবেষণায় মানবপাচারের মূল কারণ হিসেবে আবহাওয়াজনিত বিপর্যয়কে চিহ্নিত করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দরিদ্র খামারি, মৎস্য চাষী ও অন্যান্য সম্প্রদায়ের সদস্য যারা প্রধানত প্রাকৃতিক সম্পদ আহরেণের ওপর নির্ভর করে জীবিকা নির্বাহ করেন, তাদের ওপর ভয়াবহ হয়েছে।

এক সংবাদ সম্মেলনে এই প্রতিবেদনের প্রধান লেখক ফ্যাবরিজিও স্যারিকা বলেছেন, একবার নিজেদের জীবিকা নির্বাহের বন্দোবস্ত থেকে উৎখাত হলে লোকজন তাদের সম্প্রদায় থেকে পালিয়ে যেতে বাধ্য হন। আর এসব লোকজনই মানবপাচারকারীদের সহজ শিকারে পরিণত হন।

কেবল ২০২১ সালেই জলবায়ু-সংশ্লিষ্ট বিপর্যয়ের কারণে বিশ্বজুড়ে অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন ২ কোটি ৩৭ লাখ মানুষ। একই সময়ে আরও অসংখ্য মানুষ তাদের দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছেন।

জাতিসংঘের এই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বের সব অঞ্চল ক্রমবর্ধমান হারে বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়ার ঝুঁকিতে আছে। এর ফলে লাখ লাখ মানুষ অভিবাসনের পথে শোষণের উচ্চ ঝুঁকির মুখোমুখি হওয়ার শঙ্কা রয়েছে।

সংঘাতের কারণে পাচারের শিকার বেশিরভাগ মানুষই আফ্রিকা এবং মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের নাগরিক। একই সঙ্গে ইউক্রেনে চলমান যুদ্ধের কারণে লাখ লাখ মানুষ দেশটি ছেড়ে পালিয়েছেন। ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সম্ভাব্য আরেকটি বিপজ্জনক পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে।

ইউএনওডিসির মানবপাচার ও অভিবাসী চোরাচালান বিভাগের প্রধান ইলিয়াস চ্যাটজিস ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেছেন, ‘যুদ্ধ এবং অস্থিতিশীলতার কারণে মানবপাচার মোকাবিলা করাই এখন চ্যালেঞ্জ।’ তিনি বলেন, ইউক্রেনের ক্ষেত্রে প্রতিবেশী দেশগুলোর সহায়তা এবং ইউক্রেনীয় কর্তৃপক্ষের প্রতি সমর্থন বৃদ্ধি করা গুরুত্বপূর্ণ।

কোভিড-১৯ মহামারী এশিয়া, লাতিন আমেরিকা এবং আফ্রিকার নিম্ন আয়ের দেশগুলোতে পাচারের শিকার হওয়া লোকজনকে শনাক্ত করা কঠিন করে তুলেছে বলে প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।