খাগড়াছড়ি লেডিস ক্লাব’র সহায়তায় নলকূপ স্থাপনের ফলে লক্ষ্মীছড়ি উপজেলার দুর্গম দন্ডিপাড়ার ৪০পরিবার পেল বিশুদ্ধ পানির সুবিধা। খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসকের সহধর্মীনী প্রকৌশলী রাবেয়া চৌধুরী লেডিস ক্লাবের পক্ষ থেকে এ অর্থ সহায়তা প্রদানের ফলে পানির এ সুবিধায় পায় পাড়াবাসী।
সম্প্রতি খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক এর সহধর্মীনী প্রকৌশলী রাবেয়া চৌধুরী লক্ষ্মীছড়ির দন্ডিপাড়ায় শীতবস্ত্র বিতরণ করতে গেলে এলাকাবাসী পানি সংকটের বিষয়টি তুলে ধরে একটি নলকূপ স্থাপনের দাবি জানান। তারই প্রেক্ষিতে খাগড়াছড়ি লেডিস ক্লাবের পক্ষ হতে একটি নলকূপ স্থাপন করে দেয়ার জন্য অনুদান প্রদান করেন লেডিস ক্লাবের সভাপতি প্রকৌশলী রাবেয়া চৌধুরী। লক্ষ্মীছড়ি জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে নির্মাণ কাজ শেষে এলাকাবাসীর চাহিদা পূরণে পানি উত্তোলনের জন্য নলকূপটি উম্মুক্ত করে দেয়া হয়। জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তরের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো: ইব্রাহিম খলিল জানান, বরাদ্দ পাওয়ার পর লক্ষ্মীছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুলতানা রাজিয়ার নির্দেশনা ও পরামর্শক্রমে ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান প্রবিল চাকমার সহযোগিতায় দ্রæততম সময়ের মধ্যে গভীর নলকূপ স্থাপন করে পানি সরবরাহের জন্য প্রস্তুুত করা হয়। বর্তমানে স্থানীয় জনসাধারণ, বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা এ নলকূপ থেকে পানি পান করছে এবং এলাকাবাসী নিত্য প্রয়োজনীয় কাজে এখান থেকে পানি ব্যবহার করছে। শুকনা মৌসুমেও এ নলকূপ থেকে পানি উত্তোলন করা যাবে।
স্থানীয় বাসিন্দা উথোইমু মারমা জানান, এ নলকূপ থেকে পানি নিয়ে আমরা অনেক খুশি। একই প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে লাইমুমা মারমা বলেন, এতদিন আমাদের এলাকায় পানি সমস্যা ছিল। নলকূপ হওয়ার কারণে আমাদের সবার অনেক উপকার হয়েছে।
শিক্ষক মংসাজাই মারমা বলেন, এখানকার মানুষগুলোর আগে খাবার পানি আনতে হতো ছড়ার কুয়া থেকে। সেটি প্রকৃত অর্থে নিরাপদ ছিল না। বিশেষ করে বর্ষা হলে যখন কুয়া ভরাট হয়ে যায়, তখন খাবার পানির চরম সংকট পোহাতে হয়। অনিরাপদ পানি পান করার ফলে ডায়রিয়াসহ নানা রোগ দেখা দিত বলেও জানান তিনি। নলকূপ স্থাপন করে দেয়ার কারণে জেলা প্রশাসকের সহধর্মীনীকে ধন্যবাদ জানান এই শিক্ষক।
১নং লক্ষ্মীছড়ি সদর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান প্রবিল কুমার চাকমা বলেন, এ এলাকাটি সদর থেকে একটু দূরে দুর্গম এলাকা। এখানে বিশুদ্ধ পানির কোনো ব্যবস্থা নেই। এলাকাবাসী দীর্ঘদিন একটি নলকূপ দাবি করে আসছিল। সেই দাবি পূরণ করতে এগিয়ে আসেন জেলা প্রশাসক মহোদয়ের সহধর্মীনী। তাঁর আন্তরিকতার ফলে এখানে একটি নলকূপ স্থাপিত হওয়ায় এলাকাবাসী অনেক খুশি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুলতানা রাজিয়া বলেন, দন্ডিপাড়াবাসী প্রায় এক কিলোমিটার দূরবর্তী একটি কূপের পানির মাধ্যমে তাদের দৈনন্দিন চাহিদা পূরণ করে আসছিল। দন্ডিপাড়াবাসীর এ সমস্যা অনুধাবন করে লেডিস ক্লাব, খাগড়াছড়ির সম্মানিত সভাপতি এবং জেলা প্রশাসক, খাগড়াছড়ি মহোদয়ের সহধর্মিণী প্রকৌশলী রাবেয়া চৌধুরী এ এলাকায় নলকূপ স্থাপনের লক্ষ্যে অনুদান প্রদান করেন। এর ফলে দন্ডিপাড়ার প্রায় ৪০ টি পরিবার অত্যন্ত সহজে সুপেয় পানির সুবিধা পাচ্ছে।