বঙ্গোপসাগর পাড়ি দিয়ে মিয়ানমার হতে এদেশে অনুপ্রবেশকালে রোহিঙ্গা বোঝাই ফিশিং বোট ডুবির ঘটনা ঘটেছে।
এঘটনায় নারী-শিশুসহ ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। খবর পেয়ে রোহিঙ্গা স্বজনরা টেকনাফের সৈকতে ভীড় জমিয়েছে। এসময় স্বজনদের আহাজারিতে আকাশ ভারী হয়ে উঠে। নিহত সকলে রোহিঙ্গা মুসলিম।
সেদেশে অব্যাহত যুদ্ধের ফলে প্রতিনিয়ত এদেশে পাড়ি জমাচ্ছেন রোহিঙ্গারা। টেকনাফ সদর ইউনিয়নের হাবিরছড়া ও রাজারছড়া ঘাটে মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) সকাল ৯ টায় বোট ডুবির এ ঘটনা ঘটে।
বিজিবি - কোস্ট গার্ড সীমান্তে কড়া সতর্ক থাকলেও তাদের ফাঁকি দিয়ে রাতের আধাঁরে রোহিঙ্গাদের এ অনুপ্রবেশ ঘটে।
এর মধ্যে বিজিবির হাতে অনেকে আটক হলেও বেশির ভাগ রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আত্মীয় স্বজনদের কাছে আশ্রয়ে চলে যায়।
বোট ডুবির ঘটনায় একমাত্র জীবিত তাবদিলা নামে এক নারী জানান- বোটে ৩১ জন রোহিঙ্গা ছিল। এর মধ্যে তার স্বামী, তার দুই মেয়ে, তিন নাতনি ও মেয়ের জামাই ছিল। দুই মেয়ে ও দুই নাতনির লাশ পেয়েছে। বাকিদের খোঁজ মেলেনি। সে আরো জানায়, গত সোমবার ভোর চারটার দিকে মিয়ানমারের মংডুস্থ ফয়েজি পাড়া বরাবর ঘাট হতে বোটে উঠেন। নাফ নদী ও বঙ্গোপসাগর পাড়ি দিয়ে মঙ্গলবার সকাল ৯ টারদিকে টেকনাফ সদর ইউনিয়নের হাবির ছড়া ও রাজারছড়া সৈকত বরাবর পৌঁছলে বোটটি ডুবে যায়। এতে এ মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। নিহতদের মধ্যে ৩ শিশুসহ ৭ জন মহিলা ও ৩ জন পুরুষ রয়েছে।
শালবাগান ২৬ নং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের এফ ব্লকের হাসিনা বেগম জানান, বোটে উঠার আগে মুঠোফোনে যোগাযোগ ছিল নিহত স্বজনদের সাথে। এরপর থেকে যোগাযোগ ছিলনা। টেকনাফের সৈকতে রোহিঙ্গা বোঝাই বোট ডুবির খবর পেয়ে খোঁজতে আসে। সেখানে তার ভাবীর মৃতদেহ পেলেও বাকি দুই ভাইপো ও দুই নাতনীর খোঁজ মেলেনি।
অপর এক রোহিঙ্গা নারী কেঁদে কেঁদে বলেন, আবছার নামের এক নৌকার মাঝির মাধ্যমেে তার আত্মীয়রা এপারে আসছিলেন। কারো খোঁজ পায়নি।
এদিকে নৌকা ডুবির খবর পেয়ে রোহিঙ্গা স্বজনরা সৈকতে ভীড় জমিয়েছে। অনেকে পরিচয় সনাক্ত করে আত্বীয় স্বজনরা লাশ নিয়ে যাচ্ছে।
স্থানীয় মেম্বার রশিদ মিয়া জানান, প্রতিনিয়ত রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ করছে। বিজিবি কে বিষয়টি জানিয়েছেন। তিনি আরো জানান, লাশের ব্যাপারে থানায় খবর দেওয়া হয়েছে।
এব্যাপারে জানতে টেকনাফ ২ ব্যাটালিয়নের বিজিবি অধিনায়ক লে. কর্ণেল মো. মহি উদ্দিন আহমেদ এর মুঠোফোনে বার বার কল করা হলেও কল রিসিভ করছেন না। ফলে বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।