আজ শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ই বৈশাখ ১৪৩১

চট্টগ্রাম বন্দরে ব্যাপক প্রস্তুতি

নিজস্ব প্রতিবেদক : | প্রকাশের সময় : শুক্রবার ১২ মে ২০২৩ ১০:৩৮:০০ অপরাহ্ন | অর্থনীতি ও বাণিজ্য

চট্টগ্রাম: ঘূর্ণিঝড় মোখার কারণে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের ৮ নম্বর মহাবিপদ সংকেতের প্রেক্ষিতে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ ক্ষয়ক্ষতি কমাতে ব্যাপক প্রস্তুতি নিচ্ছে। খোলা হয়েছে বন্দরের মেরিন, নিরাপত্তা, ট্রাফিক ও সচিব বিভাগের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ। 

 

 

শুক্রবার (১২ মে) সন্ধ্যা ও রাতে দফায় দফায় বৈঠক করে করণীয় ও অ্যাকশন প্ল্যান নির্ধারণ করেছেন বন্দরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।  

বিষয়টি বাংলানিউজকে নিশ্চিত করেছেন বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মো. ওমর ফারুক।

 

 

 

তিনি জানান, আবহাওয়া অধিদপ্তরের সংকেতের ওপর নির্ভর করে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ নিজস্ব অ্যালার্ট জারি করে থাকে। ৮ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখাতে বলায় বন্দরের নিজস্ব অ্যালার্ট-৪ জারি করা হয়েছে। ইতিমধ্যে সাইক্লোন স্ট্যান্ডিং কমিটির সভা হয়েছে। একই সঙ্গে লাইটার জাহাজগুলোকে বন্দরের উজানে সদরঘাট থেকে কর্ণফুলী শাহ আমানত সেতু এলাকার দিকে নিরাপদ আশ্রয়ে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। জেটি ও বহির্নোঙরে থাকা জাহাজগুলোকে ইঞ্জিন চালু রাখতে বলা হয়েছে যাতে তাৎক্ষণিক মুভমেন্ট করতে পারে। বন্দরের নিজস্ব জাহাজগুলোকে নিরাপদে থেকে ডাবল মুরিং করতে বলা হয়েছে।  

এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের সতর্কতা সংকেতের ওপর নির্ভর করে পর্যায়ক্রমে জাহাজ চলাচল ও পণ্য খালাস বন্ধ করে দেওয়া হবে। যাতে বন্দর জেটি, চ্যানেল, হ্যান্ডলিং ইক্যুইপমেন্ট, আমদানি-রপ্তানি পণ্য ঘূর্ণিঝড়ের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।  

বন্দর সূত্রে জানা গেছে, শনিবার (১৩ মে) শুধু বহির্গামী জাহাজ পাইলটেজসহ পরিচালিত হবে। জেটি থেকে নদীর মুখ পর্যন্ত কোনো ধরনের লাইটার, বার্জ, ট্রলারসহ নৌযান অবস্থান করতে দেওয়া হবে না। কোস্টগার্ডের সহায়তায় কালুরঘাট থেকে সদরঘাট পর্যন্ত ছোট জাহাজগুলোকে সুশৃঙ্খলভাবে রাখা হবে। পণ্যখালাস, ডেলিভারি বন্ধের বিষয়ে শিগগির সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।   

শনিবার (১৩ মে) সন্ধ্যা থেকে কক্সবাজার ও তৎসংলগ্ন উপকূলীয় এলাকায় অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’-এর অগ্রভাগের প্রভাব শুরু হতে পারে।

অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৭৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১৪০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১৬০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর খুবই বিক্ষুদ্ধ রয়েছে।

এ অবস্থায় কক্সবাজার, চট্টগ্রাম ও পায়রা সমুদ্রবন্দরগুলোকে ০৪ (চার) নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারী সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে ০৮ (আট) নম্বর মহাবিপদ সংকেত (পুন:) ৮ (আট) নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

মোংলা সমুদ্রবন্দরকে ৪ (চার) নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারী সংকেত (পুনরায়) ০৪ (চার) নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারী সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।

উপকূলীয় জেলা কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলো ৮ (আট) নম্বর মহাবিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।

ঘূর্ণিঝড়টির অগ্রবর্তী অংশ ও বায়ুচাপ পার্থক্যের আধিক্যের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোর নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ০৮-১২ ফুট অধিক উচ্চতার বায়ুতাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।

ঘূর্ণিঝড়টির অগ্রবর্তী অংশ ও বায়ুচাপ পার্থক্যের আধিক্যের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসগুলোর নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ০৫-০৭ ফুট অধিক উচ্চতার বায়ু তাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।

উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।