কক্সবাজারের উখিয়ায় রেফারি এসোসিয়েশন ও ক্রীড়া সংস্থার অনুমতিবিহীন রোহিঙ্গা খেলোয়াড় দিয়ে চলছে সোনাইছড়ি গোল্ডকাপ ফুটবল টূর্ণামেন্ট। এছাড়াও প্রশাসনের নাম ভাঙিয়ে গণহারে চাঁদাবাজি নিয়ে দুই গ্রুপের মাঝে ব্যাপক উত্তেজনা বিরাজ করছে। স্থানীয়দের দাবী বিতর্কিত টূর্ণামেন্টটি বন্ধ করা না হলে যে কোন মুহুর্তে বড় ধরণের সংঘর্ষের আশংকা রয়েছে।
জানা গেছে, জালিয়াপালং ইউনিয়নের সোনাইছড়ি এলাকার বাসিন্দা কক্সবাজার গণপূর্ত বিভাগের কর্মরত সানা উল্লাহসহ কিছু অতি উৎসাহী যুবক সোনারছড়ি খেলোয়াড় সমিতির নাম ভাঙ্গিয়ে সোনাইছড়ি গোল্ডকাপ ফুটবল টূর্ণামেন্টের আয়োজন করে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে সোনারছড়ি খেলোয়াড় সমিতির নামক কোন সংগঠনের কার্যক্রমই নেই।
এদিকে ক্রীড়ামোদি দর্শকদের অভিযোগ, প্রশাসনের অনুমতি বিহীন গ্রামীণ পর্যায়ে ফুটবল খেলায় টিকিটের নামে ৫০টাকা করে গণহারে চাঁদাবাজি করা হচ্ছে। এছাড়াও চেয়ার দেওয়ার কথা বলে জনপ্রতি ২০০টাকা করে হাতিয়ে নেয়া হচ্ছে। এ নিয়ে দুপক্ষের মাঝে চরম অসন্তোষ বিরাজ করছে।
তাদের প্রশ্ন আয়োজক কমিটি এই আয়োজন বৈধ কিনা? টিকিটের নামের ওপেন চাঁদাবাজির অনুমতি দিল কে? সর্বোপরি টাকা গুলো কার পকেটে যাচ্ছে। ক্রীড়া উন্নয়নে ব্যয় না হলে এসব টুনামেন্ট বন্ধ করা দরকার।
উখিয়ার জালিয়াপালং ইউনিয়নের সোনাইছড়ি এলাকার জাহাঙ্গীর আলম নামে এক খেলোয়াড় ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, স্থানীয়রা খেলোয়াড়রা খেলার সুযোগ পাচ্ছে না। অথচ রোহিঙ্গা এবং বিদেশী খেলোয়াড় দিয়ে চলছে বিতর্কিত এই ফুটবল টুর্নামেন্ট। একই ধরণের কথা বলেন ওই এলাকার শাহ আলম।
আয়োজক কমিটির অন্যতম সদস্য সানা উল্লাহ এর বক্তব্য নেওয়ার জন্য একাধিক বার ফোন করার হলে তিনি মোবাইল রিসিভ করেনি।
এ ব্যাপারে কক্সবাজার জেলা রেফারীজ এসোসিয়েশন এর সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম কুতুবী জানিয়েছেন, সোনাইছড়ি গোল্ডকাপ ফুটবল টূর্ণামেন্ট এর বিষয়ে এসোসিয়েশন সভাপতি জেলা পুলিশ সুপারসহ আমরা কেউ অবগত নয়।
এসোসিয়েশন এর পক্ষ থেকে কোন অনুমতি নেয়া হয়নি। খেলা পরিচালনায় কারা দায়িত্বে রয়েছেন এ ব্যাপারেও তিনি কিছুই জানেননা।
উখিয়া উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন শাহীন বলেছেন, টূর্ণামেন্টের বিষয়ে অবহিত করেছেন। তবে খেলার নামে দর্শকদের কাছ থেকে টাকা নেয়ার নিয়ম কিংবা অনুমতি নেই।
তিনি এও বলেছেন, স্থানীয় খেলোয়াড়দের বঞ্চিত করে রোহিঙ্গা খেলোয়াড় খেলানোর বিষয়টি দূর্ভাগ্যজনক।
উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মো: শামীম হোসেন বলেছেন, শান্তিপূর্ণ পরিবেশে টূর্ণামেন্ট পরিচালনার বিষয়ে ইতোপূর্বে দু'পক্ষের সাথে আলোচনা হয়েছে। রোহিঙ্গা খেলোয়াড় দিয়ে খেলা পরিচালনা করা যাবে না। তবুও ফুটবল খেলা নিয়ে দুপক্ষের অসন্তোষ দেখা দিলে শৃঙ্খলা রক্ষায় প্রয়োজনে টূর্ণামেন্ট বন্ধ করে দেয়া হবে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে উখিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার তানবীর হোসেন বলেছেন, জেলা প্রশাসকের অনুমতি ব্যতীত বাণিজ্যিক ভাবে ফুটবল টূর্ণামেন্ট পরিচালনা করার কোন সুযোগ নেই। রোহিঙ্গাদের খেলানো এবং টিকিট মাধ্যমে টাকা নেয়ার বিষয়টি সত্যতা পাওয়া গেলে টূর্ণামেন্ট বন্ধ করে দেয়া হবে।