অর্থনৈতিক মন্দায় পড়েছে জার্মানি। দেশটিতে জ্বালানির মূল্য বাড়ায় ভোক্তারা ব্যাপকভাবে ব্যয় কমিয়ে দেওয়ায় উৎপাদনে বড় প্রভাব পড়েছে। একারণে মন্দা দেখা দিয়েছে ইউরোপের এই দেশটিতে। এছাড়া মন্দার পেছনে ইউক্রেনে চলা রুশ হামলাকেও সামাগ্রিকভাবে দায়ী করেছেন অনেকে।
জার্মানির সরকারি পরিসংখ্যান বলছে, চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে, অর্থাৎ জানুয়ারি থেকে মার্চ মাসে জার্মান অর্থনীতি ০.৩ শতাংশ সংকুচিত হয়েছে। তার আগে গত বছরের শেষ তিন মাসে, অর্থাৎ অক্টোবর থেকে ডিসেম্বরে অর্থনীতি ০.৫ শতাংশ সংকুচিত হয়েছিল। অর্থনীতির ভাষায়, কোনও দেশের অর্থনীতি পর পর দুই ত্রৈমাসিকে হ্রাস পেলে তাকে আর্থিক মন্দা বলে ধরে নিতে হবে। সেই সূত্র মেনেই এবার জার্মানিতে আর্থিক মন্দা দেখা দিয়েছে।
সাধারণত কোনও দেশে মন্দা দেখা দিলে ধরে নিতে হয়, সামগ্রিকভাবে সেই দেশের আর্থিক উৎপাদন হ্রাস পেয়েছে। যার ফলে দেখা দেয় মুদ্রাস্ফীতি, মূল্যবৃদ্ধি, বৃদ্ধি পায় বেকারত্ব, হ্রাস পায় জনগণের ক্রয়ক্ষমতা। বিশেষজ্ঞদের অনুমান, জার্মানিতেও অনুরূপ ব্যাপার ঘটে চলেছে এবং এখন তার প্রভাব দেখা দিচ্ছে। যার জন্য অনেকেই সামগ্রিকভাবে দায়ী করছে ইউক্রেনে চলা রুশ হামলাকে। যার ফলে লাগামছাড়া বেড়েছে তেল ও গ্যাসের চাহিদা, কিন্তু ঘাটতি মেটাতে গেলে রাশিয়ার মুখাপেক্ষী হয়ে থাকা ছাড়া উপায় নেই।
এপ্রিল মাসের হিসেবে জার্মানির মুদ্রাস্ফীতির হার দাঁড়িয়ে রয়েছে ৭.২ শতাংশে। যা ইউরো অঞ্চলের গড়ের চাইতে অনেকটাই বেশি।
জার্মান ফেডারেল স্ট্যাটিস্টিক্স এজেন্সি জানিয়েছে, মূল্যবৃদ্ধিটাই এখন মাথাব্যথার সবচেয়ে বড় কারণ। যার ফলে গৃহস্থের নিত্যদিনের খরচ অনেকটাই কমেছে, বিশেষ করে খাবার, পোশাক, আসবাব এই সবকিছুতেই খরচ একধাক্কায় অনেকটা কমাতে বাধ্য হয়েছেন জার্মানরা। প্রভাব এসে পড়েছে অর্থনীতিতে। মূলত গ্যাসের লাগামছাড়া চাহিদা আর তার উপযুক্ত যোগান না থাকার কারণেই বৃত্তাকার পথে একের পর এক পণ্যে মূল্যবৃদ্ধি হয়ে চলেছে। যা নিঃসন্দেহে ইউরোপের জন্য খারাপ খবর।
যদিও জার্মানির কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানিয়েছে, এতে চিন্তার কারণ নেই। বিনিয়োগ ও মূলধনের ব্যবসায় লাভ যথেষ্ট রয়েছে, বিনিয়োগ বৃদ্ধিও পেয়েছে। মন্দা বলতে যে বিপজ্জনক জায়গার কথা বলা হয়, জার্মানি এখনও অতটা যায়নি। জুনের পরেই অর্থনীতি বৃদ্ধির মুখ দেখতে পারে।