পাকিস্তানের বহুল আলোচিত তোশাখানা দুর্নীতি মামলায় দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে আদালত তিন বছরের কারাদণ্ড দেওয়ার পরপরই গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে গ্রেপ্তারের আগেই নিজ রাজনৈতিক দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) সমর্থক ও দেশের জনগণের উদ্দেশে একটি ভিডিও বার্তা দিয়েছেন ইমরান খান।
শনিবার (৫ আগস্ট) ইসলামাবাদের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা আদালতের বিচারক রায় ঘোষণার পর তাকে লাহোরের জামান পার্কের বাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এক মিনিট ৫৭ সেকেন্ডের ভিডিও বার্তায় পিটিআই চেয়ারম্যান দেশের জনগণ তাদের অধিকার ফিরিয়ে না পাওয়া পর্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদ দেখাতে সমর্থকদের প্রতি আহ্বান জানান।
‘তোমরা এই বিবৃতিটি যখন শুনবে, ততক্ষণে তারা আমাকে গ্রেপ্তার করবে। আমার একটাই আহ্বান : চুপচাপ ঘরে বসে থাকবে না। আমি তোমার, দেশ ও তোমার সন্তানদের ভবিষ্যতের জন্য লড়াই করছি।’
সমর্থকদের বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসার ও প্রতিবাদ করার আহ্বান জানিয়ে ইমরান খান বলেন, শাসকদের নিপীড়নমূলক কর্মকাণ্ডে ভীত হবে না।
ভিডিও বার্তায় ইমরান খান বলেন, পাকিস্তান প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল কালিমার নামে। মহানবী হযরত মোহাম্মদ (সা.) যখন মদিনা প্রতিষ্ঠা করেন, তখন তিনি দাসদের মুক্তি এবং জনসাধারণের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করেছিলেন।
শনিবার সকালের দিকে ইসলামাবাদের জেলা ও দায়রা আদালত সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে রাষ্ট্রীয় উপহার তছরুপের মামলায় দোষী সাব্যস্ত করে রায় ঘোষণা করে। যদিও শুরু থেকে ইমরান খান তার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
সাবেক ক্রিকেট তারকা থেকে রাজনীতিক বনে যাওয়া ৭০ বছর বয়সী ইমরান খান প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন ক্ষমতার অপব্যবহার করে রাষ্ট্রীয় কোষাগারের উপহার সামগ্রী কেনাকাটায় দুর্নীতি করেছেন বলে অভিযোগ আনা হয়েছিল। বিদেশ সফরের সময় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কাছ থেকে পাওয়া এসব উপহার সামগ্রীর মূল্য ১৪০ মিলিয়ন পাকিস্তানি রুপির বেশি।
মামলার গ্রহণযোগ্যতা বাতিল চেয়ে ইমরান খানের করা আবেদন খারিজ করে দিয়ে শনিবার ইসলামাবাদের অতিরিক্ত ও দায়রা আদালতের বিচারক হুমায়ুন দিলাওয়ার সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে তিন বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন।
রায়ে বিচারক বলেছেন, ‘পিটিআই চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে সম্পদের ভুল ঘোষণার অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে।’ এরপর তিনি খানকে এক লাখ রুপি জরিমানাসহ তিন বছরের কারাদণ্ড দেন এবং তাৎক্ষণিকভাবে গ্রেপ্তারের জন্য পরোয়ানা জারি করেন।