জাপানের অর্থ, শিল্প ও বাণিজ্যমন্ত্রী ইয়াসোতুশি নিশিমুরা বলেছেন, বিগত কয়েক বছরে বাংলাদেশ অকল্পনীয় উন্নতি করেছে। এটা সম্ভব হয়েছে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দক্ষ নেতৃত্বের জন্য।
রোববার (২৩ জুলাই) রাজধানীর একটি হোটেলে ‘বাংলাদেশ-জাপান ইকনোমিক রিলেশনস ফর দ্য নেক্সট ফিফটি ইয়ার্স: ফর দ্য ইন্ডাস্ট্রি আপগ্রেডেশন অব বাংলাদেশ’ শীর্ষক সেমিনারে এ কথা বলেন নিশিমুরা।
বাংলাদেশের সঙ্গে জাপানের বাণিজ্যিক সম্পর্কের ভিত অনেক গভীর। যমুনা ব্রিজ থেকে শুরু করে মেট্রোরেল, থার্ড টার্মিনাল এবং মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দর পর্যন্ত প্রতিটি অবকাঠামোগত মাইলফলক জাপান-বাংলাদেশ পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে অর্জন করেছে।
বাংলাদেশের সম্ভাবনার কথা উল্লেখ করে নিশিমুরা বলেন, বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার একটি সম্ভাবনাময় দেশ। বাংলাদেশে বিনিয়োগ থেকে শুরু করে সব ধরনের সহযোগিতা করতে জাপান প্রস্তুত।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যে অর্থনৈতিক সহযোগিতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রথমবারের মতো দুই দিনের বাংলাদেশ সফরে এসেছেন নিশিমুরা। এর আগে রোববার (২৩ জুলাই) সকালে বিমানবন্দরে তাকে স্বাগত জানান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পূর্ব এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় শাখার মহাপরিচালক তৌফিক হাসান। এ সময় বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরি উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে সেমিনারে অংশ নিয়ে বাংলাদেশের বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, জাপান বাংলাদেশের জন্য রোল মডেল। জাপান যেভাবে তাদের জনসংখ্যাকে জনশক্তিতে রূপান্তর করেছে; তা অনুকরণীয়।
তিনি আরও বলেন,
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর জাপানের হাতে সম্পদ বলতে ছিল তাদের জনশক্তি। এর বাইরে জাপানের কিছুই ছিল না। সেই জনশক্তিকে কাজে লাগিয়ে জাপান এতদূর এসেছে। এখান থেকে বাংলাদেশের অনেক কিছু শেখার আছে।
দেশে দক্ষ জনশক্তি গড়ে তোলার গুরুত্ব উল্লেখ করে টিপু মুনশি বলেন, দেশের জনশক্তি যত দক্ষ হবে, বাইরে থেকে তত বেশি বিনিয়োগ আসবে। প্রযুক্তি এবং দক্ষতার সমন্বয়ে এমন একটি জনশক্তি গড়ে তোলা হবে; যা দেশের প্রবৃদ্ধির জন্য সহায়ক হয়। জনশক্তি দক্ষ হলে, কম সময়ে বেশি ফলাফল আসতে বাধ্য।
জাপানের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের ব্যাখ্যা দিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী আরও বলেন, এশিয়ার মধ্যে ভারতের পরেই বাংলাদেশের বৃহৎ রফতানি বাজার জাপান। গত বছর জাপানে বাংলাদেশের রফতানির পরিমাণ ছিল প্রায় ২ বিলিয়ন ডলার। ২০২৬ সালের নভেম্বরে বাংলাদেশ এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন করে উন্নয়নশীল দেশে উন্নত হবে। এক্ষেত্রে জাপানের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বৃদ্ধির কোনো বিকল্প নেই।
বাংলাদেশের মধ্যবিত্ত শ্রেণির সম্ভাবনার কথা উল্লেখ করে মন্ত্রী আরও বলেন, বাংলাদেশে বিকাশমান একটি মধ্যবিত্ত শ্রেণি তৈরি হচ্ছে। এতে করে একদিকে বড় হচ্ছে ভোক্তা বাজার, অন্যদিকে বাড়ছে দক্ষ জনশক্তির সংখ্যা। জাপানের বিভিন্ন কোম্পানি চাইলে এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশে বিনিয়োগ বাড়াতে পারে।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ হুমায়ূন, আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরি প্রমুখ।