কক্সবাজারের রামু উপজেলার খুনিয়া পালংয়ের ধোয়াপালং রাবেতা এলাকায় আব্দুল আমিন (৩৮) নামক চালক হত্যা মামলার আসামিদের কেউ গ্রেফতার হয়নি। ঘটনার ৮ দিন পার হলো। আসামিরা এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে। তাদের অবস্থানও নিশ্চিত করতে পারেনি পুলিশ। মামলার বাদী কামাল হোসেনকে নানা মাধ্যমে হুমকি দিচ্ছে আসামিরা।
ঘটনার পর থেকে নিহতের পরিবারের সদস্যরা নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে। কান্না থামছেনা পিতৃহীন ও শোকাহত ছয় সন্তানের। উদ্বিগ্ন অসহায় স্ত্রী।
গত ৯ আগস্ট দুপুর সাড়ে তিনটার দিকে সীমানা বিরোধের জের ধরে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে আবদুল আমিনকে ব্যাপক মারধর ও কুপাঘাত করে প্রতিপক্ষরা। এতে তিনি গুরুতর আহত হন। স্থানীয়রা উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়।
চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৩ আগস্ট চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান আবদুল আমিন।
ঘটনার পরের দিন (১০ আগস্ট) সুস্পষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে ৪ জনের বিরুদ্ধে রামু থানায় মামলা করেন নিহতের ছোট ভাই কামাল হোসেন। যার থানার মামলা নং-১৭/৪৩৮।
আসামিরা হলেন, খুনিয়া পালং ৬ নং ওয়ার্ডের ধোয়া পালং রাবেতা পাড়ার আব্দুল বারির ছেলে নুরুল হক (২৫), আব্দুছ সবুরের ছেলে শাহজাহান (৩৯), আব্দুল জব্বারের ছেলে আমির হামজা ড্রাইভার (৩৮) ও সুলতান আহাম্মদের ছেলে আব্দুল বারী (৫৫)। অজ্ঞাতনামা আসামি রয়েছে আরও তিনজন।
নিহত আবদুল আমিন একই এলাকার মৃত ইবনে আমিনের ছেলে। পেশাগত সে পিকআপ গাড়ী চালক এবং ৫ মেয়ে ও এক ছেলে সন্তানের জনক। একমাত্র উপার্জনকারী আবদুল আমিনকে হত্যার পর পরিবারে চরম দুর্দিন যাচ্ছে।অসহায়ত্ব দেখা দিয়েছে সন্তানদের। অভাব-অনটনের দিন কাটছে বলে জানান স্ত্রী নুর ফাতেমা বেগম।
মামলার বাদী কামাল হোসেন জানান, ঘটনার ৮ দিন পার হয়েছে। একজন আসামিও গ্রেফতার হয়নি। আমির হামজাসহ অন্যান্য আসামিরা বিভিন্ন মাধ্যমে মামলা তুলে নিতে হুমকি দিচ্ছে। আয়-রোজগার না থাকায় নিহতের স্ত্রী ও তার ছয় সন্তানের করুন দিন যাচ্ছে।
দ্রুত সময়ে আসামিদের গ্রেফতারের দাবি কামাল হোসেনের।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা হিমছড়ি ফাঁড়ির ইনচার্জ পুলিশ উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. সাইফুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, এক আসামির লাস্ট লোকেশন কক্সবাজার, আরেকজন চট্টগ্রাম দেখা যায়। এরপর থেকে দুইজনই সিম ও ডিভাইস সম্পন্ন বন্ধ রাখে। অবস্থান নিশ্চিত না হওয়ায় কাউকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে রামু থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মুহাম্মদ আনোয়ারুল হোসাইন শুক্রবার (১৯ আগস্ট) সকাল পৌনে ১১ টার দিকে মুঠোফোনে বলেন, আসামিদের গ্রেফতারে পুলিশের আন্তরিকতার কোন ঘাটতি নাই। আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। অভিযান অব্যাহত আছে।
অবস্থান নিশ্চিত হয়ে খুব সহসাই আসামিদের গ্রেফতার করা হবে বলে জানান ওসি।
স্থানীয় একটি সূত্রে জানা গেছে, আবদুল আমিন হত্যা মামলার আসামিরা উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিতে নানামুখী তদবির চালাচ্ছে। গ্রেফতার এড়াতে বারবার স্থান পরিবর্তন করছে। পরিবার ও স্বজনদের সাথে যোগাযোগ রাখছে সুকৌশলে।
আসামিদের স্ত্রী-সন্তান আটকে রেখে জিজ্ঞাসাবাদ করলে অবস্থানগত সঠিক তথ্য মিলবে মনে করছে স্থানীয়রা।