চট্টগ্রামের বোয়ালখালীতে চাঁদা না পেয়ে এক প্রবাসীর স্ত্রী ও শ্বাশুড়িকে ধর্ষণের হুমকী দিয়ে ভয়েস ম্যাসেজ পাঠানোর অভিযোগ উঠেছে মো. জাহাঙ্গির আলম নামের এক ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে।
তিনি বোয়ালখালী উপজেলার শ্রীপুর-খরণদ্বীপ ইউনিয়নের ২নং ওর্য়াডের ইউপি সদস্য। এ ঘটনায় বোয়ালখালী থানা পুলিশের কোন সহায়তা না পেয়ে ওই প্রবাসী আবুধাবীর বাংলাদেশ দূতাবাসের মাধ্যমে চট্টগ্রাম জেলা জেলা প্রশাসকের কাছে আইনী সহায়তা চেয়ে অভিযোগ দায়ের করেন।
এরই প্রেক্ষিতে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের নির্দেশে বোয়ালখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মামুন সোমবার দুপুরে তার কার্যালয়ে উভয় পক্ষের উপস্থিতি শুনানির মাধ্যমে তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পেয়ে অভিযুক্ত ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য বোয়ালখালী থানার অফিসার ইনচার্জকে নিদের্শনা দিয়েছেন।
আবুধাবীর বাংলাদেশ দূতাবাসের মাধ্যমে জেলা প্রশাসককে দেয়া অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে,২০২২ সালের ৫ই জানুয়ারী ইউপি নির্বাচনে ইউপি সদস্য জাহাঙ্গীর আলমের প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী খোরশেদ আলমকে ভোট দেয়ার পাশাপাশি তার পক্ষে কাজ করায় বিজয়ী প্রার্থী জাহাঙ্গির আলম ওই প্রবাসী ও তার পরিবারের উপর ক্ষিপ্ত হন। নির্বাচনের পর থেকে জাহাঙ্গিরসহ তার অনুসারীরা প্রবাসী ও তার পরিবারকে নানা হয়রানি নির্যাতনসহ বার বার চাঁদা দাবী করে আসছেন। বিষয়টি থানা পুলিশকে জানিয়েও কোন প্রতিকার পাননি তিনি। এরই মধ্যে তিনি প্রবাসে কর্মস্থলে ফিরে যান। কিন্তু ইউপি সদস্য জাহাঙ্গীর থেমে থাকেননি প্রবাসীর মুঠোফোনে কল দিয়ে চাঁদার টাকা দাবী অব্যাহত রেখে নানা রকম হুমকী দেন। চাঁদা না পেয়ে এক পর্যায়ে ইউপি সদস্য প্রবসীর স্ত্রী ও শ্বাশুড়ীকে ধর্ষণের হুমকী দিয়ে প্রবাসীর মোবাইলের ইমুতে ভয়েস ম্যাসেজ পাঠান।(এ সংক্রান্ত রেকডিং প্রতিবেদকের কাছে সংরক্ষিত আছে)
জেলা প্রশাসককে দেয়া অভিযোগের প্রেক্ষিতে, বোয়ালখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সোমবার দুপুরে ঘটনাটি তদন্তের স্বার্থে তার কার্যালয়ে উভয়পক্ষের উপস্থিতিতে শুনানি করেন। শুনানীতে অভিযোগ প্রমাণীত হওয়ায় তিনি ইউপি সদস্য জাহাঙ্গির আলমকে বরখাস্তসহ তার বিরুদ্ধে যাথাযথ ব্যবস্থা নিতে লিখিত সুপারিশ করেছেন বলে জানা গেছে।
প্রবাসীর স্ত্রী জানায়, জাহাঙ্গির আলমসহ তার অনুসারীদের অত্যাচারে তারা অতিষ্ট। রেকডিংসহ প্রমাণ থাকার পরও থানা পুুলিশ কোন ব্যবস্থা নিচ্ছেন না। ফলে তার স্বামী দূতাবাসের মাধ্যমে অভিযোগ করেছেন।
অভিযুক্ত ইউপি সদস্য মো. জাহাঙ্গির আলম বলেন, এ রেকডিংগুলো এডিট করা হয়েছে। প্রতিবেদনটি প্রকাশ না করার জন্য অনুরোধ করে তিনি বলেন যা করতে হয় তিনি প্রতিবেদকের জন্য করবেন। তিনি দেখা করবেন।
এ বিষয়ে উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মামুন বলেন, তিনি বিষয়টি শুনানি করে ঘটনার সত্যতা পেয়েছেন। তাই তিনি ইউপি সদস্যকে বরখাস্তসহ তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে লিখিত প্রতিবেদন পাঠাবেন এবং বোয়ালখালী থাানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে এ বিষয়ে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা নেয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।
অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে পুলিশ কোন ব্যবস্থা না নেয়ার বিষয়ে জানতে বোয়ালখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্ত আসহাব উদ্দিনের মুঠোফোনে বার বার ফোন দিলেও তিনি প্রতিবেদকের ফোন তুলেননি।
এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (পটিয়া র্সাকেল) ড.আশিক মাহমুদ বলেন, তিনি বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবেন।