চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি মহাসড়কের হাটহাজারী উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের সরকারহাট বাজারে দাঁড়িয়ে থাকা ৩/৪টি গাড়ির সাথে বেপরোয়া গতির শান্তি পরিবহনের ধাক্কায় আহত ড্রাম ট্রাক চালক মানিকের মৃত্যু হয়েছে। দীর্ঘ চারদিন নগরীর একটি প্রাইভেট হাসপাতালে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার(২৭জুন) সকাল ১০টায় মারা যায়। মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে রাস্তায় নেমে আসে শত শত জনতা। খাগড়াছড়ি নাজিরহাট আঞ্চলিক মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষুব্ধ জনতা। দীর্ঘ চার ঘণ্টা পর্যন্ত যান চলাচল বন্ধ থাকে চট্টগ্রাম নাজিরহাট খাগড়াছড়ি সড়কে। একদিকে মৃত্যুর ঘটনায় নিহতের পরিবারের আহাজারীতে পুরো এলাকায় সুখের ছায়া নেমে এসেছে। অন্যদিকে বিক্ষুব্ধ জনতা মহাসড়ক অবরোধে পথচারী ও যাত্রী সাধারণের চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। নিহত মানিক মির্জাপুর ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড বুলবুলি পাড়ার মালিক নুরী চেয়ারম্যান বাড়ির ইদ্রিস মিয়ার পুত্র। তার সংসারে অবুঝ দুই সন্তান রয়েছে। তিনি পেশায় মিনি ড্রাম ট্রাক চালক। তিনি গত শনিবার (২২ জুন) সকাল ৭টার দিকে সরকারহাট বাজারে নিজের চালানো ড্রাম ট্রাকটি পানি দিয়ে পরিষ্কার করছিলো এমন সময় খাগড়াছড়িগামী বেপরোয়া গতির শান্তি পরিবহনের একটি বাস ওভারটেক করতে গিয়ে সড়কের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা ৩/৪টি গাড়ি কে সজোরে ধাক্কা দেয়। এ সময় মিনি ড্রাম ট্রাক চালক মানিক গুরুতর আহত হয়। আমরা খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে ভাই কে উদ্ধার করে নগরীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করেছি। কিন্তু ভাই ৫ দিন চিকিৎসারত অবস্থায় আজ সকালে মৃত্যু বরণ করেন বলে জানান নিহত মানিকের ভাই নজরুল।
এদিকে মানিকের মৃত্যু খবর ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় জনতা মহাসড়কে নেমে আসে। তখন মহাসড়কে যানজট সৃষ্টি হয়। সবার দাবি ঘাতক বাস চালকের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি এবং মরণফাঁদ হাটহাজারী ফটিকছড়ি মহাসড়কে ডিভাইডার দেয়ার জোর দাবি রাখেন।
প্রসঙ্গত, গত শনিবার (২২ জুন) সকাল ৭টার দিকে খাগড়াছড়িগামী শান্তি পরিবহনের একটি বাস ওভারটেক করতে গিয়ে সড়কে দাঁড়িয়ে থাকা ৩/৪টি গাড়ি কে দুমড়ে মুচড়ে দেয়। এ ঘটনায় ঘাতক বাসটি জব্দ করলেও চালক পালিয়ে যায় বলে জানান নাজিরহাট হাইওয়ে পুলিশের এসআই আনিস।
নাজিরহাট হাইওয়ে পুলিশের ওসি মফিজ বলেন, সরকারহাট বাজারে দাঁড়িয়ে থাকা টেম্পো, জিপ এবং মিনি ড্রাম ট্রাক কে সজোরে ধাক্কা দেয় শান্তি পরিবহনের একটি বাস। এ ঘটনায় বাসটি জব্দ করা হয়েছে। তবে বাস চালক পালিয়ে যাওয়ায় আটক করা হয়নি।
হাটহাজারী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান ঘটনাস্থলে গনমাধ্যম কর্মীদের জানান, একজন চালক নিহত হওয়ায় স্থানীয় জনসাধারণ সড়ক অবরোধ করেন। আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ও বাস মালিক নেতৃবৃন্দের সাথে কথা বলে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে সরকারি নিয়ম অনুযায়ী অর্ধেক ক্ষতিপূরণ দেয়ার আশ্বাসে সড়ক অবরোধ তুলে নেয় বিক্ষুব্ধ জনতা। পরে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক করতে আমরা কাজ করেছি। এ ঘটনায় গাড়ি ভাঙচুরসহ অপ্রীতিকর কোন ঘটনা ঘটেনি।