গত ১ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত পেকুয়া উপজেলার ফাসিয়াখালী ইসলামিয়া কামিল মাদরাসার গভর্নিংডি নির্বাচনে আবুল হোসাইন শামা নামক ব্যক্তিকে বিধি বহির্ভুতভাবে দাতা সদস্য মনোনীত করার অভিযোগ ওঠেছে। তাকে কমিটি থেকে বাদ দিয়ে জালিয়াতিতে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের আবেদন দিয়েছেন মাহমুদুল করীম নামক অভিভাবক।
মাদরাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) বরাবর ১৫ এপ্রিল লিখিত অভিযোগ করেছেন। ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের নিকট একই অভিযোগ করেছেন তিনি।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, মাদরাসার নতুন গভর্ণিং বডি গঠনের জন্যে তফসিল ঘোষনা করা হলে আবুল হোসাইন শামা অভিভাবক পদে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন। যাবতীয় ডকুমেন্ট প্রিসাইডিং অফিসার ও পেকুয়া উপজেলার লাইভ স্টক অফিসারের দপ্তরে আছে। উক্ত পদে মোট ৭ জন প্রার্থী হলে অধ্যক্ষের সাথে যোগাযোগ করে সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে এলাকার জনৈক বেলাল সাহেবের মাধ্যমে মাদরাসার গেইট নির্মানের ভাওচারে আবুল হোসাইন শামার নাম বসিয়ে দিয়ে তাকে দাতা সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করে, যা গভর্ণিং বডির মিটিংয়ে পাস হয় নি।
মাহমুদুল করীমের আরো অভিযোগ হলো, ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের নোটিশমতে ১ লাখ টাকার কমে দাতা হওয়ার সুযোগ নাই। মাহমুদুল করীম মাত্র ২০ হাজার টাকার অনুদান দেখিয়ে নভেম্বর মাসে কিভাবে দাতা হলেন? বিষয়টি বোধগম্য নয়।
খোঁজখবর নিয়ে জানা গেছে, দাতা সদস্য পদে মনোনয়নপত্র নিয়েছিলেন ৩ জন। সেখান থেকে অতি কৌশলে ২ জনকে বাদ দিয়ে আবু হোসাইন শামাকে বিজয়ী ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া একই সাথে ২টি পদে মনোনয়নপত্র নিয়েছিলেন আবুল হোসাইন শামা, যা আইনত অবৈধ।
এ বিষয়ে দাতা সদস্য পদ নির্বাচনের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রিজাইডিং অফিসারে ও মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা মুহাম্মদ আক্কাছের নিকট জানতে চাইলে বলেন, আবুল হোসাইন শামা দাতা সদস্য পদে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছিলেন। একই সাথে অভিভাবক সদস্য পদে যে তিনি ফরম নিয়েছিলেন তা আমার কাছে প্রকাশ করেনি।
তিনি আরো বলেন, দাতা সদস্য পদে ৩ প্রার্থীর মধ্যে ২ জন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেওয়ায় আবুল হোসাইন শামাকে ‘নির্বাচিত’ দেখিয়ে কমিটি পাঠিয়ে দিয়েছি।
অভিভাবক সদস্য পদ নির্বাচনের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রিজাইডিং অফিসার ও পেকুয়া লাইভ স্টক অফিসার ডা. আছাদুজ্জামান বলেন, একজন ব্যক্তি ২টি পদে মনোনয়নপত্র নেওয়ার সুযোগ নেই। তাছাড়া আমি শুধু অভিভাবক সদস্যের বিষয়টি দেখেছি।
এ বিষয়ে মাদরাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) বিভীষন কান্তি দাসের বক্তব্য নেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু পাওয়া যায়নি।
জানা গেছে, আবুল হোসাইন শামা ৫ম শ্রেণি পাশ করেছেন কিনা সন্দেহ এলাকাবাসীর। এরকম একজন ব্যক্তিকে কামিল মাদরাসা পরিচালনা কমিটির সহসভাপতি করা হয়েছে। এ নিয়ে শিক্ষক, অভিভাবক ছাড়া সাধারণ মানুষও প্রশ্ন তুলছেন। তার দাতা সদস্য হওয়ার প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তো আছেই।
স্থানীয়রা বলছেন, তথ্য গোপন ও শটতামির আশ্রয় নিয়েছিলেন আবুল হোসাইন শামা। একটি দ্বীনি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে জালিয়াতির ঘটনা খুবই দুঃখজনক। বিষয়টি সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক জড়িতদের ব্যাপারে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ জানিয়েছেন সাধারণ অভিভাবকগণ। তবে অভিযুক্ত আবুল হোসাইন শামার বক্তব্য জানতে মুঠোফোনে পাওয়া যায়নি।