কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার ডুলাহাজারায় শিক্ষকের বাড়িতে রাতের অন্ধকারে হামলা, ভাঙচুর চালিয়েছে চিহ্নিত অপরাধীচক্র। এ সময় ঘরের অভ্যন্তরে থাকা শিশু, নারী, পুরুষদের জিম্মি করে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে গেছে বলে জানা গেছে।
রবিবার (১৪ এপ্রিল) দিবাগত রাত সাড়ে ১১টার দিকে ৭ নং ওয়ার্ডের নতুন পাড়ার বাসিন্দা অক্সফোর্ড ক্যামব্রিজ ও টুফেল ইংলিশ গ্রামার গবেষক জহিরুল ইসলামের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। এই সময় তিনি বাড়িতে না থাকায় প্রাণে বেঁচে গেছেন।
এলাকাবাসী জানিয়েছে, স্থানীয় চিহ্নিত অপরাধী মো. শাহজাহান, তানজিম উদ্দিন, মো. মিছবাহ, শওকত, জাওয়াদসহ অজ্ঞাতনামা ১০/১২ জন লোক অস্ত্র ও লাঠিসোঁটাসহ শিক্ষক জহিরুল ইসলামের বাড়ির ঘেরাবেড়া, ঘরের ছাউনির টিন ভাঙচুর করে। ঘরের ভেতরে ছিলেন স্ট্রোকাক্রান্ত পিতা বজল আহমদ (৯৭), বয়োবৃদ্ধ মা সুফিয়া খাতুন (৭৫)। অবস্থা দেখে তারাও শারীরিকভাবে ভেঙে পড়েছেন।
ঘটনার কারণ জানতে চাইলে শিক্ষক জহিরুল ইসলাম বলেন, আমার এলাকায় মাদক ব্যবসা, অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্রের ব্যবহার, কিশোরগ্যাংসহ নানা অপরাধ বেড়েছে। এসব অপরাধের নেপথ্যে থাকে স্থানীয় চিহ্নিত অপরাধী ডাকাত সর্দার শাহজাহান। তার বিরুদ্ধে রয়েছে অসংখ্য মামলা। শাহজাহানের সেকেন্ড ইন কমান্ড হিসাবে রয়েছে আপন ভাই মিছবাহ। মূলত: অপরাধ ছেড়ে দিতে বলায় তারা আমার বিরুদ্ধে লেগে আছে। গুলি করেছে সরাসরি বেশ কয়েকবার। ভাড়া করা কিলার দিয়ে আমাকে কয়েকদফা মারতে চেয়েছে। এমনকি ঈদুল ফিতরের আগের দিনও আমাকে মেরে ফেলতে ঘর ঘেরাও করে রেখেছিল। পরে এলাকাবাসীর সহায়তায় আমি কৌশলে আত্মরক্ষা করে নিরাপদে অবস্থান গ্রহণ করি।
এদিকে, চিহ্নিত অপরাধীদের বিরুদ্ধে চকরিয়া সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে গত ৩ এপ্রিল সাধারণ ডায়েরী করেছেন জহিরুল ইসলাম। যার জিডি নং-১৭২/২৪।
জিডিসুত্রে জানা যায়, ডুলাহাজারা নতুন পাড়ায় কিশোর গ্যাং, ছিনতাই, ইয়াবা সেবন, মাদক কারবারসহ নানা অপরাধ কর্মকাণ্ড বেড়েছে। সচেতন নাগরিক হিসেবে জহিরুল ইসলাম এ সব অপকর্মের প্রতিবাদ করেন। তাতে ক্ষিপ্ত হয় অপরাধীচক্র।
স্থানীয় বাসিন্দা জসিম, ফরহাদ,ব্যবসায়ী মনিরসহ অনেকে জানান, ডাকাতিকালে গণধোলাইয়ের শিকার হয় শাহজাহান। এ সময় তার কোমর ভেঙে দেয়। তার বোন আনার কলি ইয়াবাসহ আটক হয়ে দীর্ঘদিন জেল খটেছে। শাহজাহান বর্তমানে ডুলাহাজারা নতুন পাড়া এলাকায় ২টি এবং কক্সবাজার শহরে একটি বহুতল ভবন মালিক। রয়েছে অগনিত অবৈধ টাকা।
শাহজাহানের গ্রুপের অন্যতম সদস্য তানজিম উদ্দিনের হাতে অবৈধ অস্ত্রের ছবি সম্প্রতি ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। তাকে গ্রেফতার করে অস্ত্র উদ্ধারের দাবি উঠে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
চিহ্নিত অপরাধীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি স্থানীয় বাসিন্দাদের।
এ বিষয়ে চকরিয়া থানার ওসি শেখ মোহাম্মদ আলী বলেন, অপরাধ করে কেউ পার পাবে না। খোঁজখবর নিয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।