কক্সবাজারের বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও জেলার নিম্নাঞ্চলের ইউনিয়নগুলোর কিছু এলাকা নতুন করে প্লাবিত হয়েছে। জেলার চকরিয়া, রামু ও পেকুয়া উপজেলার ১৫টি ইউনিয়নের এক লাখের অধিক মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছেন। নানা প্রতিবন্ধকতার কারণে পাহাড়ি ঢলের পানি সরে যেতে পারছে না। গত সোমবার থেকে জেলায় হঠাৎ করে টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে বন্যা দেখা দেয়।
জেলা ও উপজেলা প্রশাসন থেকে প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, কক্সবাজারের রামু উপজেলার গর্জনিয়া, কচ্ছপিয়া রাজারকুল ফতেখাঁরকুলসহ ৬টি ইউনিয়নের ৫০ হাজার বাসিন্দা এখনও পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছেন। বন্যার পানি সরে না যাওয়ায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন এ এলাকার মানুষ।
চকরিয়া উপজেলার সুরাজপুর-মানিকপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আজিম উদ্দিন জানিয়েছেন, চকরিয়া উপজেলায় মাতামুহুরি নদীবেষ্টিত ইউনিয়নে পাহাড়ি ঢলের পানি ঢুকে প্লাবিত হয়েছে। এতে উপজেলার ৫০ হাজার মানুষ পানিবন্দি। উপজেলার নিচু এলাকায় নতুন করে বন্যার পানি ঢুকেছে। তবে মাতামুহুরি নদীর পানি বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
বন্যার পানি নেমে যাওয়ায় কক্সবাজার-টেকনাফ মহাসড়কে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়ে উঠেছে। তবে চকরিয়া-মানিকপুর, রামু-নাইক্ষ্যংছড়ি সড়কসহ জেলার বেশ কয়েকটি আঞ্চলিক সড়কে বন্যার পানি উপচে পড়ায় যানবাহন চলাচল ব্যাহত হচ্ছে।
পাহাড়ি ঢলের তোড়ে মাতামুহুরি ও বাকখালী নদীর কমপক্ষে ১০টি পয়েন্টে বেড়িবাঁধ ভেঙে গেছে। ভাঙন দিয়ে লোকালয়ে ঢলের পানি ঢুকে এসব এলাকা প্লাবিত হয় বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
এদিকে, কক্সবাজার শহরের সমিতিপাড়াসহ ১ নম্বর ওয়ার্ডে বৃষ্টি ও জোয়ারের পানি আসা-যাওয়া করায় ওই এলাকার ৫০০ বাড়িঘরে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। পানিবন্দি মানুষের জন্য দ্রুত সরকারি সহায়তা দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান জানিয়েছেন, সপ্তাহ ধরে ভারী বৃষ্টিতে পাহাড়ি ঢল ও জোয়ারের পানিতে যেসব এলাকায় বন্যা দেখা দিয়েছে, সেসব এলাকায় ত্রাণসহায়তা পাঠানো হয়েছে। স্ব স্ব উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তাদের (ইউএনও) প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসন পরিস্থিতি সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণে রেখেছেন।