চট্টগ্রাম: নগরের অবকাঠামো খাতের উন্নয়নের মাধ্যমে বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধিতে জাপানের সহযোগিতা চেয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. রেজাউল করিম চৌধুরী।
সোমবার (১০ এপ্রিল) টাইগারপাসে চসিক কার্যালয়ে জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনরির (Iwama Kiminori) সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে মেয়র বলেন, চট্টগ্রাম ঐতিহাসিকভাবেই বন্দর ও বাণিজ্য নগরী হিসেবে বিখ্যাত।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চট্টগ্রামের এ বাণিজ্য সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে টানেল নির্মাণ থেকে বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন খাতে বিশাল বিনিয়োগ করেছেন। বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী চট্টগ্রামের উন্নয়নে আড়াই হাজার কোটি টাকার প্রকল্প বরাদ্দ দিয়েছেন।
এ প্রকল্পের মাধ্যমে চট্টগ্রামে উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলা হচ্ছে যা চট্টগ্রামকে বিশ্বের বাণিজ্যিক হাবে পরিণত করবে। এই উন্নয়নে জাপানকে পাশে চাই।
প্রাকৃতিক অবস্থানের কারণে চট্টগ্রামের যে বিপুল বাণিজ্যিক সম্ভাবনা আছে তা কাজে লাগাতে উন্নত মানের যোগাযোগ এবং লজিস্টিকস গড়ে তোলার চেষ্টা করছি আমি। জাইকাসহ জাপানের সরকারি-বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থাগুলো এক্ষেত্রে বাংলাদেশের পাশে দাঁড়াতে পারে। জাপানের অর্থনৈতিক সহায়তার পাশাপাশি প্রযুক্তিগত জ্ঞান আর অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে আমি নান্দনিক চট্টগ্রাম গড়তে চাই।
মেয়রকে আশ্বস্ত করে জাপানের রাষ্ট্রদূত বলেন, জাইকার পাশাপাশি প্রাইভেট-পাবলিক পার্টনারশিপ মডেলে বিনিয়োগ করে জাপানি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলো চট্টগ্রামের অবকাঠামো উন্নয়নে ভূমিকা রাখছে। ভবিষ্যতেও এ ধারা অব্যাহত থাকবে।
বাংলাদেশে বাণিজ্য প্রসারে জাপান আগ্রহী জানিয়ে রাষ্ট্রদূত বলেন, চট্টগ্রাম ইপিজেড ও মীরসরাইর বঙ্গবন্ধু শিল্পনগরে জাপানের অনেক প্রতিষ্ঠানের বিনিয়োগ রয়েছে। বর্তমানে চট্টগ্রামে জাপানের সবচেয়ে বড় করপোরেশনগুলোর একটি নিপ্পন স্টিলসহ বড় ২০টি শিল্পগ্রুপ বাণিজ্যিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছে এবং আরও অনেক প্রতিষ্ঠান বিনিয়োগ করতে আগ্রহী। পর্যাপ্ত সহযোগিতা পেলে এ বিনিয়োগ অনেকগুণ বাড়তে পারে।
বন্দর ও সড়ক ব্যবহারের ক্ষেত্রে কাস্টমসসহ প্রশাসনিক জটিলতা কমানো গেলে জাপানের বিনিয়োগের স্বর্গভূমি হতে পারে চট্টগ্রাম। এলডিসি থেকে বাংলাদেশের উত্তরণ ঘটেছে। তাই ব্যবসাক্ষেত্রের বৈচিত্র্য আনয়নে জাপানি বিনিয়োগ বাংলাদেশে ভারী শিল্পের বিকাশ ঘটাতে পারে।
বন্দরনগরী চট্টগ্রামের অমিত সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশের উন্নয়নের গতিধারাকে বেগবান করতে জাপান সবসময় সহযোগিতা করে আসছে বলে মন্তব্য করেন রাষ্ট্রদূত।
এ সময় চট্টগ্রাম সফরে আসা জাপানি সামরিক জাহাজ জেএস উরাগা (JS Uraga) এবং জেএস আয়াজির (JS Awaji) সঙ্গে আসা প্রতিনিধি দল মেয়রকে বলেন, জাপান পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে শান্তিপূর্ণ বিশ্ব নির্মাণের সংকল্প বাস্তবায়নে বাংলাদেশের সহযোগিতা চায়।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন জাপানী জাহাজবহরের নেতৃত্বে থাকা ক্যাপ্টেন নাকাই ইচি ( Nakai Eiici), অনাবাসিক ডিফেন্স এটাচি ক্যাপ্টেন তাচিবানা হিরোশি (Tachibana Hiroshi), কমান্ডার মাতসুনাগা আকিহিতো ((Matsunaga Akihito), তাগুচি তাকুমি (Tahuchi Takuma), প্রথম সচিব ইগাই ইয়ুকা (Iigai Yuka), দ্বিতীয় সচিব কোবায়াশি য়ুশিহাকি (Kobayashi Yoshiaki), চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম, প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা লুৎফুন নাহার, মেয়রের একান্ত সচিব ও প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা মুহাম্মদ আবুল হাশেম, অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মুনিরুল হুদা, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী বিপ্লব দাশ, নির্বাহী প্রকৌশলী মীর্জা ফজলুল কাদের, মো. শাহীনুল ইসলাম, শিক্ষা কর্মকর্তা উজালা চাকমা, জনসংযোগ ও প্রটোকল কর্মকর্তা আজিজ আহমদ।