কাল পবিত্র হজ্ব, এবারে হজ্বে অংশনেয়া বিশ্বের ১৬০-টির বেশি দেশের প্রায় ৩০ লাখ ধর্মপ্রাণ মুসল্লী সমবেত হচ্ছেন তাবু শহর মিনায়।
ইসলাম ধর্মের সর্বচ্চ ধর্মীয় ফরজ ও বিশ্বের সবচেয়ে বড় জামায়াতে সৌদি আরবের মক্কা নগরীর ঐতিহাসিক আরাফাত ময়দানে অনুষ্ঠিত হবে পবিত্র হজ্ব।
আগামীকাল ২৭ জুন মঙ্গলবার আরাফাত দিবস বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম মসজিদ নামিরা থেকে হজ্বের খুতবা ও নামাজ আদায়ের মধ্যদিয়ে পালিত হবে হজ্বের মূল আনুষ্ঠানিকতা।
পবিত্র মসজিদুল হারাম থেকে প্রায় ৯ কিলোমিটার দূরের মিনা এখন যেন তাঁবুর শহর। যে দিকে চোখ যায়, তাঁবু আর তাঁবু। তাঁবুতে প্রত্যেকের জন্য আলাদা ফোম, বালিশ, কম্বল বরাদ্দ। ফোমের নিচে বালু। মিনায় অবস্থান করা হজের অংশ। হজযাত্রীরা নিজ নিজ তাঁবুতে নামাজ আদায়সহ অন্যান্য ইবাদত করছেন।
আজ ২৬ জুন সোমবার হজ্ব যাত্রীর আল্লাহ নিকট ইবাদত ও দোয়া প্রার্থনা করে তাবু শহর মিনায় অবস্থান করবেন।
এ বছর বাংলাদেশ থেকে ১ লাখ ২২ হাজার-সহ বিশ্বের ১৬০ টির দেশের ৩০ লাখ ধর্মপ্রাণ মুসল্লী হজ পালন করবেন।
সৌদি আরবের হজ ও ওমরাহ বিষয়ক মন্ত্রী ডা. তৌফিক আল রাবিয়া বলেন, গত রোববার থেকে বিশ্বের লাখো মুসলিমের লাব্বাইক ধ্বনিতে মুখরিত মক্কা নগরীর মিনা। এ বছর ৩২ হাজারের বেশি স্বাস্থ্যকর্মী হজযাত্রীদের সেবা দেবেন। হজ পালনে আল্লাহর অতিথিদের সব ধরনের সহযোগিতা করতে সরকার ও সৌদির জনগণ অংশ নেবে।
পবিত্র স্থানগুলোতে পরিবহন ব্যবস্থার কথা উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, মিনা, আরাফাত ও মুজদালিফার মতো স্থানগুলো একটি সমন্বিত পরিবহন ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে। তাছাড়া এক স্থান থেকে অন্যস্থানে যাওয়ার জন্য থাকবে ট্রেন ও বাস।
সব জায়গাতেই বিশেষ করে মিনায় সব ধরনের সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম হলো হাজযাত্রীদের স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা।
আল-রাবিয়া জোর দিয়ে আরও জানান, তার মন্ত্রণালয় আল্লাহর অতিথিদের স্বস্তি নিশ্চিত করতে ও হজে একটি সমৃদ্ধ অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্য কঠোর পরিশ্রম করছে। এ ক্ষেত্রে কয়েক বছর ধরেই পরিশ্রম করছে সৌদি সরকার।
নারী নিরাপত্তাকর্মীরা হাজিদের নিরাপত্তার পাশাপাশি পবিত্র কোরআন বিতরণ ও হাজিদের হজের নিয়মকানুন শিখিয়ে দেবেন। কাল মঙ্গলবার সূর্যোদয় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আরাফাত ময়দানের উদ্দেশে রওনা হবেন হাজিরা। আরাফাত ময়দানে জোহর ও আসর নামাজ একসঙ্গে আদায় করবেন তাঁরা। তারপর সূর্যাস্তের সঙ্গে সঙ্গে হাজিরা মুজদালিফার উদ্দেশে রওনা দেবেন এবং রাতে সেখানেই অবস্থান করবেন। পথে শয়তানকে নিক্ষেপ করার জন্য পাথর সংগ্রহ করবেন।
হজের এই বিশাল কার্যক্রম পরিচালনার জন্য বাংলাদেশ থেকে প্রশাসনিক প্রতিনিধিদল সৌদি আরব পৌঁছেছেন অনেক আগেই। সেইসঙ্গে স্বাস্থ্যসেবার জন্য এসেছে চিকিৎসক দল।
এবার হজ সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় সুষ্ঠু এবং সুন্দরভাবে হজ সম্পন্ন হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
উল্লেখ্য, সৌদি আরবে হজ পালন করতে গিয়ে মক্কা ও মদিনা এপর্যন্ত ২৬ বাংলাদেশির মৃত্যু হয়েছে।তাদের মধ্যে ২২ জন পুরুষ ও ৪ জন নারী রয়েছে।