বান্দরবানের আলীকদমে উপজেলায় মারাইংতং জেদী পাহাড়ে যাওয়ার জন্য আবাসিক রাস্তার মাথা হইতে শিলবুনিয়া মার্মা পাড়া এলাকার ইউনিব্লকের সড়ক নির্মাণ কাজটি বাস্তবায়ন করছে। এই ১ কিলো ৯ শত মিটার সড়ক নির্মাণ কাজে ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ২ কোটি টাকা। এই কাজটি বাস্তবায়ন করছেন মেসার্স শাহ জব্বারিয়া এন্টারপ্রাইজ নামের ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান। ইউনিব্লক দিয়ে দৃষ্টিনন্দন সড়ক নির্মাণ করেছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)।
সাধারণত ইউনিব্লক ইট তৈরি করা হয় বালি,পাথর ও সিমেন্টের সংমিশ্রণে যা রোদে শুকিয়ে ব্যবহার উপযোগী করা হয়। এই পুরো প্রক্রিয়ায় পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর কোনো বিষয় নেই, ফলে এটা পরিবেশবান্ধবও বটে।
এদিকে চিরাচরিত ইটের রাস্তা সকলের কাছে পরিচিত হলেও আলীকদম উপজেলার এই প্রথম ইউনিব্লক দিয়ে রাস্তাটি নির্মাণের ফলে স্থানীয় জনসাধারণের কাছে বিষয়টি খুবই আগ্রহ ও উচ্ছ্বাসের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে।
আবাসিক এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা মোঃ ইয়াসিন আরাফাত বলেন, রাস্তাটি হওয়ায় এলাকাবাসী খুবই আনন্দিত। এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থার এই উন্নয়নের জন্য এলজিডি কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে এলাকাবাসীর পক্ষ হতে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
স্থানীয় বাসিন্দা রুবেল ত্রিপুরা বলেন,আমরা মারাইংতং পাহাড়ের ঢালে চাষাবাদ করি। এতদিন চাষাবাদের ফসল পরিবহনে আমাদের জন্য অনেক কষ্ট করতে হত। রাস্তাঘাট ভালো না থাকায় এখানে গাড়ি আসতে চাইত না। এখন এই রাস্তাটি হওয়ার কারণে জমির ফসল পরিবহনে ঝামেলা নেই। খুব সহজেই আমরা উৎপাদিত কৃষিজাত পণ্য বাজারে নিয়ে যেতে পারছি। অর্থনৈতিক ভাবে লাভবান হচ্ছি আমরা।
এদিকে নিজের ওয়ার্ডে প্রথম ইউনিব্লক দিয়ে দৃষ্টিনন্দন রাস্তা নির্মাণ হওয়ায় স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে আনন্দ প্রকাশ করেছেন ২নং চৈক্ষ্যং ইউপির ২ নং ওয়ার্ড মেম্বার মো.নুরুল ইসলাম বলেন,রাস্তা হওয়ায় আমরা অনেক খুশি হয়েছি। ইউনি ব্লকের রাস্তাটি আলীকদম উপজেলায় প্রথম। এই রাস্তাটি এলাকার অর্থনৈতিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখছে বলে জানান তিনি।
আলীকদম উপজেলায় প্রথম ইউনিব্লকের এই দৃষ্টিনন্দন সড়কটি নির্মাণ করেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী মোঃ শহিদুল ইসলাম চৌধুরী বলেন,প্রথম বারের মতো আলীকদমে ইউনিব্লক দিয়ে সড়কের এই কাজটি করতে একটু ভয় কাজ করছিল। তবুও চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেছি।মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই কাজটি শেষ করতে পারবো বলে আমি বিশ্বাস রাখি। এলাকাবাসীর সঙ্গে আমিও আনন্দিত।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের আলীকদম উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ আবুল কালাম আজাদ বলেন,আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে পরিবেশের ক্ষয়ক্ষতি প্রতিরোধে ইটভাটা নিয়ন্ত্রণে ইউনিব্লকের ব্যবহার বাড়াতে মূলত এই সব প্রকল্প হাতে নেওয়া হচ্ছে। পরিবেশ বান্ধব ইউনিব্লক দিয়ে সড়ক নির্মাণের ফলে এক দিকে যেমন সড়কটি দৃষ্টিনন্দন দেখায়, পাশাপাশি এর স্থায়ীত্ব দীর্ঘদিন হয় এবং রক্ষণাবেক্ষণ খরচও কম। তাই এটা বেশ জনপ্রিয়তা পাচ্ছে দিন দিন।