চট্টগ্রাম সীতাকুণ্ডের কৃতি সন্তান ও চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের সাবেক চক্ষু বিভাগের প্রধান ডাঃ মাসুদ পারভেজ স্মরণে ফ্রি চক্ষু শিবির সম্পন্ন হয়েছে। ৩ ডিসেম্বর শুক্রবার সকাল ৮টায় সীতাকুণ্ড উপজেলা মিলনায়তনে এ চক্ষু শিবির অনুষ্ঠিত হয়।
সিলেট এম.এ.জি ওসমানি মেডিকেল কলেজের ২১তম ব্যাচের ডাক্তারদের আয়োজনে এবং সীতাকু- উপজেলা পরিষদ ও বেসরকারী সংস্থা ইপসার সহযোগিতায় এ চক্ষু শিবিরের আয়োজন করা হয়।
সকাল ৮টা থেকে অনুষ্ঠিত হওয়া চক্ষু শিবিরি দুপুর ১২ গিয়ে শেষ হয়, এ সময়ের মধ্যে সীতাকুণ্ড উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে চিকিৎসা নিতে আসে ১১শ’র বেশি রোগী। সবাইকে প্রাথমিক চিকিৎসা ও ঔষধ দিয়ে ছেড়ে দিলেও ২১৭ জনকে অপারেশনের জন্য নির্বাচন করা হয়। যাদের যাওয়া-আসা, থাকা-খাওয়া, অপারেশন, ঔষধ ও বাড়ী পৌছে দেয়া পর্যন্ত সম্পূর্ণ খরচ বহন করবে ডাঃ মাসুদ পারভেজ এর পরিবার ও সিলেট এম.এ.জি ওসমানি মেডিকেল কলেজের ২১তম ব্যাচ।
চক্ষু শিবিরে উপস্থিত থেকে সার্বিক তত্ত্বাবধান করেন সীতাকু- উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাহাদাত হোসেন ও ডাঃ মাসুদ পারভেজ এর ২১ তম ব্যাচের ৮-১০জন ডাক্তার এবং মাসুদ পারভেজ এর পরিবারের সদস্যরা। তন্মধ্যে, ডাক্তার শাকিল আহমেদ, ডাক্তার আতিকুল ইসলাম, ডাক্তার কামরুল ইসলাম, ডাক্তার কামরুল হাসান, ডাক্তার দিলরুবা সিরাজী, ডাক্তার মাসুদ পারভেজ এর সহধর্মীণি ডাক্তার শেফা সারওয়াত, ডাক্তার শারমিন আক্তার মিতু, ডাক্তার শারমিন আক্তার রুমি, ডাক্তার মুসারাত আলম তারিন, ডাক্তার নাসরিন সুলতানা, ডাক্তার ইরতিয়াজ সাজ্জাদ, ডাক্তার মুনির, ডাক্তার মুমতাহিনা মাশরুফা সহ ইপসার কর্মকর্তাবৃন্দ এবং স্কাউট দল৷
চক্ষু শিবির শেষে ডাক্তার মাসুদ পারভেজ এর ২১তম ব্যাচের ডাক্তারদের মধ্যে স্মৃতি চারণ করতে গিয়ে একজন বলেন, অনুষ্ঠান চলাকালে আমাদের একটিবারও মনে হয়নি ডাক্তার মাসুদ পারভেজ আমাদের মাঝে নেই, মনে হয়েছে ডাক্তার মাসুদ পারভেজ আমাদের মাঝে এখানে কোথাও আছে। তিনি আরও বলেন, জন্মভূমি সীতাকু-ের প্রতি ডাক্তার মাসুদ পারভেজ এর এক অন্যরকম টান ছিলো, কখনও যদি বিশেষ কোন কাজে শুক্রবার আসতে পারতেন না তখন আমাদের বলতেন একটু যা ভাই আমার সীতাকু-ের রোগীরা এসে চিকিৎসা না পেয়ে ফিরে গেলে কষ্ট পাবে, এই বলে তিনি কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। পুরো আলোচনায় আবেগে আপ্লুত হয়ে সবাই অশ্রু ঝরিয়েছেন। উপস্থিত ডাক্তার ও ডাক্তার মাসুদ পারভেজ এর পরিবারের পক্ষ থেকে উপজেলা প্রশাসন ও ইপসাকে ধন্যবাদ জানান পাশাপাশি ভবিষ্যতে এধরনের চক্ষু শিবির যাতে আরও করা যায় সে জন্য সবার সহযোগিতা কামনা করেন।
সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. শাহাদাত হোসেন বলেন, আমি সীতাকুণ্ডে এসেছি আজ প্রায় ৬মাস হলো, হঠাৎ আমার পরিবারের চক্ষু ডাক্তারের প্রয়োজন পড়ে, তখন আমি সীতাকুণ্ডে ভালো চক্ষু ডাক্তারের খোঁজ নিতে গেলে সবাই শুধু ডাক্তার মাসুদ পারভেজের কথাই বললেন এবং একজন বললেন, আপনি দেরি করে ফেলেছেন আর কিছু দিন আগে আসলে ডাক্তার মাসুদ পারভেজ কে পেলে আপনার উপকার হতো। তখনই আমি বুঝতে পারি ডাক্তার মাসুদ পারভেজের চলে যাওয়া সীতাকুণ্ডের সাধারণ মানুষের কতটুকু অপুরণীয় ক্ষতি হয়েছে। আমি ডাক্তার মাসুদ পারভেজের আত্মার মাগফেরাত কামনা করি এবং ভবিষ্যতে এ ধরণের চক্ষু শিবিরের আয়োজন করলে সীতাকুণ্ড উপজেলা প্রশাসন সর্বাত্বক সহযোগীতা করবে বলে আশা ব্যক্ত করেন।