সেনাবাহিনীসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা অপহৃত রুমার সোনালী ব্যাংক ম্যানেজারকে উদ্ধারের জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন বান্দরবানের জেলা প্রশাসক (ডিসি) শাহ মোজাহিদ উদ্দিন।
বুধবার (৩ এপ্রিল) সকাল ১১টায় রুমায় ডাকাতি হওয়া সোনালী ব্যাংক পরিদর্শন শেষে বান্দরবান জেলা প্রশাসক শাহ মোজাহিদ উদ্দিন এ তথ্য জানান। এ সময় পুলিশ সুপার (এসপি) সৈকত শাহীন উপস্থিত ছিলেন।
জেলা প্রশাসক বলেন, গতকালকের ঘটনাটি তদন্ত করা হচ্ছে। এ ঘটনার সিসিটিভির ফুটেজ সংগ্রহ করা হচ্ছে। সেনাবাহিনীসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা অপহৃত ব্যাংক ম্যানেজারকে উদ্ধারের জন্য সর্বাত্নক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। বর্তমানে এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভাল আছে।
পুলিশ সুপার সৈকত শাহী জানান, গত রাতে সোনালী ব্যাংক ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। ব্যাংকের ম্যানেজারকে অপহরণ ও ব্যাংকে পুলিশের গার্ডদের ১০৪টি অস্ত্র লুট করে নিয়ে গেছে। ঘটনার পর অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। তবে এ ঘটনায় কারা জড়িত তা তদন্ত করা হচ্ছে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে।
এদিকে মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) রাত ৯টায় এই ব্যাংক ডাকাতির ঘটনায় বান্দরবান জেলাজুড়ে চলছে নানা ধরনের আন্দোলন। জেলায় মানুষের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে। বুধবার সকাল ১১টায় বঙ্গবন্ধু মুক্ত মঞ্চে ‘পার্বত্য এলাকার নাগরিকের সাংবিধানিক অধিকার নিশ্চিত করতে হবে’ এ পতিপাদ্যে রুমায় সশস্ত্র সন্ত্রাসী গোষ্ঠী কেএনএফ কর্তৃক সোনালী ব্যাংক ডাকাতি, সরকারি অস্ত্র লুট এবং ব্যাংক ম্যানেজারকে অপহরণের প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ।
সমাবেশে বক্তব্য দেন পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি কাজী মজিবর রহমান। তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি কুকি চিনের (কেএনএফ) কারণে পাহাড়ে অশান্তির সৃষ্টি হয়েছে। সরকার ও শান্তি কমিটি তাদের নির্মূল করতে ব্যর্থ। যে দেশে সেনাবাহিনীকে হত্যা করা হয়, পুলিশকে হত্যা করা হয়, অস্ত্র লুট হয়। এটি বিশাল সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকি। সরকার সিদ্ধান্ত দিলে একদিনেই কেএনএফ’কে নির্মূল করতে সক্ষম। এখানে সরকারি সিদ্ধান্তের দরকার।’
এর আগে, গতকাল মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে রুমা উপজেলায় বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র সংগঠন কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) বিরুদ্ধে সোনালী ব্যাংক ডাকাতি, লুটপাট ও অপহরণের অভিযোগ উঠেছে। ব্যাংকের ভল্ট ভেঙে কয়েক কোটি টাকা লুটের পাশাপাশি ম্যানেজারকে অপহরণ করে নিয়ে গেছেন কেএনএফ সদস্যরা। পাশাপাশি ব্যাংকের বেশকিছু অস্ত্র ও গুলিও তারা লুট করে নিয়ে গেছেন বলে জানিয়েছেন ব্যাংক কর্মকর্তারা।