রাঙ্গুনিয়ায় সন্ত্রাসীদের গুলিতে পিতা-পুত্রসহ ৪ জন গুরুতর আহত হয়েছেন। চাঁদার দাবিতে এই সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটেছে বলে জানা যায়। গতকাল সোমবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) রাত ১১টার দিকে উপজেলার সরফভাটা ইউনিয়নের মীরেরখীল পশ্চিমপাড়া এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।
আহতরা হলেন উপজেলার সরফভাটা ইউনিয়নের মীরেরখীল পশ্চিমপাড়া এলাকার কৃষক তাজুল ইসলাম (৬৫), তার দুই ছেলে সাইদুল ইসলাম সুমন (৩১) ও ইয়াছিন আরফাত ইমন (১৯) এবং একই এলাকার নুরুল ইসলামের ছেলে এনাম হোসেন (৩৬)। তারা বর্তমানে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এই ঘটনায় পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।
আহতদের স্বজনরা জানান, তারা সবাই দিনমজুর। কৃষিকাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। সোমবার রাতে তাদের ফসলী জমিতে হাতির পাল আসার খবরে সুমন ও ইমন তাদের কৃষি জমিতে যান। এসময় তাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায় একদল দুর্বৃত্ত।
সন্ত্রাসীরা গুলি ছুড়লে গুলিবিদ্ধ হন সুমন এবং ইমনকে কুপিয়ে জখম করা হয়। ছেলেকে বাঁচাতে তাদের পিতা তাজুল ইসলাম ছুটে এলে তাকেও এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করা হয়। এমনকি চলে যাওয়ার সময় তাদের প্রতিবেশী এনামকেও বেধড়ক মেরে জখম করা হয়। আহতরা যন্ত্রণায় রাতভর ছটফট করলেও সন্ত্রাসীদের ভয়ে কেউ এগিয়ে আসেনি। পরে সকালের দিকে স্বজনরা এসে তাদের উদ্ধার করে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার রবিউল হোসেন বলেন, “তাদের অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।”
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে রাঙ্গুনিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) মো. মাহবুব মিলকী বলেন, “হামলার ঘটনায় পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। এখন পর্যন্ত কেউ এই বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দেয়নি। তবে সন্ত্রাস নির্মূলে ওই এলাকায় পুলিশি তৎপরতা বাড়ানো হবে।”
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত এক মাস ধরে সরফভাটা মীরেরখীল এলাকায় সন্ত্রাসীদের উপদ্রব বেড়েছে। স্থানীয় প্রবাসীসহ বিত্তবানদের টার্গেট করে তারা নিয়মিত চাঁদা আদায় করে আসছে। সন্ত্রাসীদের বেপরোয়া চাঁদাবাজির কারণে অন্তত শতাধিক পরিবার অন্যত্র চলে যেতে বাধ্য হয়েছে। পাহাড়বেষ্টিত এই এলাকায় হত্যা, ডাকাতি, চুরি, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, মারামারিসহ একাধিক চাঞ্চল্যকর মামলার অন্তত ২০/২৫ জন অবৈধ অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরাই নিয়মিত এসব ঘটনা ঘটিয়ে চলেছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
এই বিষয়ে সরফভাটা ইউপি চেয়ারম্যান শেখ ফরিদ উদ্দিন চৌধুরী বলেন, “সরফভাটায় বেপরোয়া সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে অতিষ্ট হয়ে উঠেছেন বাসিন্দারা। পেশাদার এসব খুনি ও ডাকাতদল নিয়মিত ডাকাতি, চুরি, ছিনতাইসহ নানা অপরাধ কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে। তাদের কোনো দলীয় পরিচয় নেই। এসব সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড রোধে সরফভাটার জনসাধারণ দীর্ঘদিন ধরে একটি স্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প স্থাপনের দাবি জানিয়ে আসছে। সন্ত্রাস নির্মূলে পুলিশ ক্যাম্প স্থাপনসহ সন্ত্রাসীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার জোর দাবি জানাচ্ছি।”