রাঙ্গুনিয়ার বিভিন্ন স্থানে আম বাগানে,রাস্তার ধারে পাহাড়ি অঞ্চল, সমতল ভূমিতে সারি সারি গাছে শোভা পাচ্ছে কেবলই মুকুল। আর সেই মুকুলে ছেয়ে আছে গাছের ডালপালা। বাতাসে মিশে আসে মুকুলের ম ম ঘ্রাণ। যে ঘ্রাণ মনকে বিমোহিত করে। পাশাপাশি মধুমাসের আগমনী বার্তা জানাচ্ছে আমের মুকুল। আমের ফলন নির্ভর করছে আবহাওয়ার ওপর। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এ বছর আমের বাম্পার ফলনের আশা করছেন রাঙ্গুনিয়া বাগান মালিকরা।
ইতোমধ্যেই আমের মুকুলে বাতাসে ম ম গন্ধে মাতোয়ারা হয়ে উঠেছে চারিদিক। বর্তমানে আম চাষি ও বাগান মালিকরা বাগান পরিচর্চায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। অবশ্য গাছে মুকুল আশার আগে থেকেই গাছের পরিচর্চা করে আসছেন তারা। রাঙ্গুনিয়া উপজেলারসহ আশেপাশে মধ্যে সবচেয়ে বেশি আমের চাষ হয় পদুয়া, বাঙ্গালহালিয়া,চন্দ্রঘোনা,বেতাগী,রাণীরহাট, কাপ্তাই এবং পাহাড়ে ডালুয়া স্থানে।
রাঙ্গুনিয়া উপজেলার নিশ্চিন্তপুর এলাকার শিক্ষক নুরুল ইসলাম বলেন--- মৌসুমের শুরুতে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় মুকুলে ভরে গেছে বাগানসহ ব্যক্তি উদ্যোগে লাগানো আম গাছ গুলোতে। তবে বড় আকারের চেয়ে ছোট ও মাঝারি আকারের গাছে বেশি মুকুল ফুটেছে। সেই মুকুলের ম ম গন্ধে বাগানড় মালিকদের চোখে ভাসছে সফলতার স্বপ্ন। দেশি আমের পাশাপাশি আম্রুপালি, গোপালভোগ, ল্যাংড়া, ফজলি জাতের আম অন্যতম। ইতোমধ্যে এসব গাছে মুকুল আসা শুরু হয়েছে।
রাঙ্গুনিয়া উপজেলার উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা লিটন দাস বলেন--এবার আগাম মুকুল ফুটেছে। আবহাওয়া ভালো থাকলে মুকুলগুলো নষ্ট হবার সম্ভাবনা নেই। আমের মুকুলের পরিচর্যায় উকুন নাশক এভোমেট্রিন ও ছত্রাকনাশক মেনকোজেভ বালাইনাশক স্প্রে করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। গত মৌসুমে আমের বাজার ভালো থাকায় লাভবান হয়েছিলেন চাষিরা। গত বছরের চেয়ে এ বছর রাঙ্গুনিয়ায় আম বাগান আরো বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে বাণিজ্যিকভাবে এখনো আম চাষ শুরু হয়নি রাঙ্গুনিয়ায়। আবহাওয়া অনুকূল থাকায় আমের উৎপাদন গত বছরের তুলনায় অনেক বেশি হবে বলে ধারণা করছেন তিনি। লিটন দাস আরো বলেন---আমের পরিচর্যা এবং বাগান সম্পর্কে কেউ আমাদের কাছে পরামর্শ চাইলে আমরা বিনামূল্যে পরামর্শ দেয় এবং আম গাছে স্প্রে করার জন্য আমরা যে সমস্ত প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র আমরা তা প্রদান করি। এক্ষেত্রে ম্যানকোজেট গ্রুপের ছাত্রাকনাশক দুই গ্রাম অথবা ইমাডোক্লোরিড গ্রুপের দানাদার প্রতি লিটার পানিতে দশমিক দুই গ্রাম, তরল দশমিক ২৫ মিলিলিটার ও সাইপারম্যাক্রিন গ্রুপের কীটনাশক প্রতি লিটার পানিতে এক মিলিমিটার মিশেয়ে স্প্রে করতে হবে বলে জানান এই কৃষি কর্মকর্তা।
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাসান মাহমুদ এমপি মহোদয়ের ছোট ভাই এরশাদ মাহমুদ--আমাদের পদুয়ায় ২ একরের বেশ কয়েকটি আম বাগান আমি করছি। গতবছর আমের মুকুল ভালো হওয়ায় ফলন ভালো হয়েছে। আশা করছি এ বছরও আমার বাগানে ভালো ফল হবে। তিনি আরো বলেন আমার ২ একর আম বাগানে যে পরিমাণ ফল হয় তা এখানকার চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন জায়গায় যায়। এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় আমের উৎপাদন বিগত বছরের তুলনায় অনেক বেশি পাওয়ার আশা করা যাচ্ছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার গাছে খুব একটা কীটনাশক প্রয়োগের প্রয়োজন নেই। তবে ছাত্রাকজনিত রোগেও আমের মুকুল-ফুলগুটি আক্রান্ত হতে পারে।