রিকশাভ্যানে পেঁয়াজ বিক্রেতার হাঁকডাক শুনে ভিড় করছেন ক্রেতারা। যে পেঁয়াজ দুই সপ্তাহ আগে খুচরায় ৫৫ টাকা টাকা কেজি বিক্রি হয়েছে তা ৩৩ টাকা কেজিতে পাওয়ায় খুশি তারা। তা-ও রমজানের আগে আগে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সরবরাহ বেশি হওয়ায় পাইকারিতে কমছে পেঁয়াজের দাম। তার প্রভাব ধীরে ধীরে পড়ছে খুচরায়। মূলত সারা বছর ভারত থেকে সড়কপথেই সিংহভাগ পেঁয়াজ আমদানি হয় দেশে। মৌসুমের শুরু থেকে মাঝামাঝি পর্যন্ত মিয়ানমার থেকে পেঁয়াজ আসে। সংকটের সময় বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে সমুদ্রপথে আসা বাহারি সব পেঁয়াজের দেখা মেলে। এখন বাংলাদেশের মেহেরপুরি পেঁয়াজের সরবরাহ ও বিক্রি বেশি আড়তে। তবে পচনশীল কাঁচাপণ্য হওয়ায় পেঁয়াজ বেশিদিন রাখা যায় না আড়ত বা গুদামে। তাই সরবরাহের ওপরই দাম নির্ভর করে। সরবরাহ বেশি হলে দাম কমে, সরবরাহ কমলে দাম বাড়ে।
দেশের বৃহত্তম ভোগ্যপণ্যের পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জ। স্বাভাবিক সময়ে এখানকার আমদানিকারকরা পেঁয়াজ আমদানি করেন না। তারা চীন থেকে রসুন ও আদাই আমদানি করেন বেশি। পেঁয়াজের বাজার হিলিসহ বিভিন্ন স্থলবন্দর কেন্দ্রিক আমদানিকারকরাই নিয়ন্ত্রণ করেন। আমদানিকারক থেকে ট্রাক বোঝাই করে খাতুনগঞ্জের আড়তে পেঁয়াজ নিয়ে আসেন বেপারিরা। প্রতিদিন অর্ধ শতাধিক পেঁয়াজের ট্রাক ঢুকছে খাতুনগঞ্জ, চাক্তাই, পাহাড়তলীসহ জেলার বিভিন্ন আড়তে।
খাতুনগঞ্জের মেসার্স কামাল উদ্দিন ব্রাদার্স নামের আড়তের নাসির উদ্দিন মঙ্গলবার (২২ মার্চ) সকালে বলেন, ভারতের নাসিক ও কানপুরি পেঁয়াজ আড়তে প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে মানভেদে ২৫-২৯ টাকা। মিয়ানমারের পেঁয়াজ ২৫-২৭ টাকা। দেশি মেহেরপুরি পেঁয়াজ ১৭-২০ টাকা। তবে চট্টগ্রামের মানুষ ভারত ও মিয়ানমারের বেশি ঝাঁজের পেঁয়াজই বেশি পছন্দ করেন। আমদানি, সরবরাহ, সড়কপথ স্বাভাবিক থাকলে এবার রমজানে পেঁয়াজের দাম বাড়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।
চালের বড় আড়তের পাশাপাশি পাহাড়তলী বাজারেও বেশ কয়েকটি পেঁয়াজের আড়ত গড়ে উঠেছে। বিএম ট্রেডার্সের আবদুল কাইয়ুম জানান, ভারতের পেঁয়াজ ২৮-৩০ টাকা, মিয়ানমারের পেঁয়াজ ২৮ টাকা বিক্রি করছি। মাসের শেষ দিকে হওয়ায় মানুষের হাতে টাকা নেই। তাই বেচাবিক্রিও কম। চাকরিজীবীরা বেতন পেলে রমজানের শুরুতে বেচাকেনা বাড়বে আশা করি।
খুচরা দোকানে প্রতিকেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৩৬-৪০ টাকা।