চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে ডিমের বাজারে চলছে কারসাজি। হাত বদলেই প্রতি ডজন ডিমের দাম বাড়ছে ২০ টাকা করে। পাইকারিতে এক ডজন ডিমের দাম ১৪৪ টাকা হলেও খুচরায় সে ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ১৬৪ টাকায়।
পাইকারি ডিম ব্যবসায়ীরা বলছেন, আমরা বিভিন্ন খামার থেকে ডিম সংগ্রহ করে তা পাইকারিতে বিক্রি করি। বর্তমানে ১০০ ডিম বিক্রি হচ্ছে ১২০০ টাকায়। সে হিসাবে একটি ডিমের দাম পড়ে ১২ টাকা। খুচরা বাজারে সেই ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৪ টাকা করে। অর্থাৎ পাইকারির তুলনায় প্রতি পিস ডিম দুই টাকা বেশিতে বিক্রি হচ্ছে।
ভোক্তারা বলছেন, ডিমের বাজারে এখন অরাজকতা চলছে। পাইকারি হিসেবে প্রতি ডজন ডিমের দাম পড়ছে ১৪৪ টাকা। কিন্তু খুচরা বাজারে ডজন ডিমের দাম পড়ছে ১৬৪ টাকা। মুনাফা করারও তো একটা সীমা আছে। উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের কোনো কোনো গ্রামের বাজারে প্রতিটি ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৫ টাকায়।
হাদি ফকিরহাট বাজারের খুচরা বিক্রেতা মনোয়ার হোসেন বলেন, আমরা সকালে ডিম বিক্রি করেছি ১৬০ টাকায়। বিকেলে বিক্রি করেছি ১৬৫ টাকায়। পাইকারিতে বাড়ছে তাই আমরাও বেশি দামে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছি।
ক্রেতা মফিজুর রহমান বলেন, বাসায় বাচ্চাদের জন্য নিয়মিত ডিম কিনতে হয়। আগে এক ডজন কিনলেও এখন বাধ্য হয়ে কিনি এক হালি (৪টি)। ডিম তো আমদানি করতে হয় না, তারপরও এভাবে দাম বাড়ার কোনো কারণ দেখছি না।
বড়দারোগাহাট বাজারের ডিমের পাইকারি ব্যবসায়ী কানু ভৌমিক বলেন, আমরা খামারি থেকে বেশি টাকায় ডিম কিনলে, বেশি টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে। প্রতিটি ডিমে অন্তত এক টাকা লাভ না হলে ব্যবসা ছেড়ে দিতে হবে। তবে খুচরা ব্যবসায়ীরা হয়তো প্রতি ডিমে দুই থেকে তিন টাকা বেশি বিক্রি করছে।
বারইয়ারহাট বাজারের ডিমের আড়তদার নিজাম উদ্দিন বলেন, ডিমের দাম এখন আবারও বাড়ছে। আসলে এখানে আমাদের ব্যবসায়ীদের দোষ আছে। যার এক গাড়ি ডিম দরকার তিনি কিনে রাখছেন তিন গাড়ি। একই কাজটি খুচরা ব্যবসায়ীরাও করছেন। যে কারণে হঠাৎ করে ডিমের চাহিদা বেড়ে যাওয়ার সুযোগটি নিচ্ছেন উৎপাদনকারীরাও।
কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রাম বিভাগীয় সভাপতি এসএম নাজের হোসেন বলেন, বাজারে প্রতিটি পণ্য নিয়ে চলছে সিন্ডিকেট। ব্যবসায়ীরা একেক সময় একেক পণ্য নিয়ে খেলছেন। এর সর্বশেষ সংযোজন হচ্ছে ডিম। ডিম আমাদের দেশের নিম্ন ও মধ্যবিত্তশ্রেণির মানুষের প্রোটিনের অন্যতম প্রধান উৎস। সেই ডিমের দাম প্রতিনিয়ত বাড়ছে। গরিব মানুষ আগে যারা একটি ডিম দুজনে ভাগ করে খেতো, তাদের সেই ভাগটি নিঃসন্দেহে বাড়বে।