চট্টগ্রাম বন্দরে আমদানি-রপ্তানি পণ্য হ্যান্ডলিংয়ে নিম্নগামী প্রবণতা লক্ষ্য করা গেছে। আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসের পর অক্টোবরেও দেশের এই প্রধান সমুদ্রবন্দরে আমদানি-রপ্তানি পণ্য হ্যান্ডলিং ধারাবাহিকভাবে কমেছে। ব্যবসায়ীরা মনে করছেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ পরিস্থিতিতে বৈশ্বিক মন্দা এবং ডলার সংকট কাটাতে নানান পণ্য আমদানিতে নিরুৎসাহী করার পাশাপাশি রপ্তানি কমে যাওয়ায় এমনটি হয়েছে।
বন্দর সূত্রে জানা যায়, চলতি অর্থবছরে অক্টোবর মাসে আমদানি পণ্যের কনটেইনার হ্যান্ডলিং হয়েছে ৯৭ হাজার ৫৩৮ টিইইউ’স (২০ ফুট দৈর্ঘ্যের কন্টেইনার), সেপ্টেম্বরে হ্যান্ডলিং হয়েছে ১ লাখ ১ হাজার ৪৯৩ টিইইউ’স এবং আগস্টে হ্যান্ডলিং হয়েছে ১ লাখ ১৪ হাজার ৯২০ টিইইউ’স। এতে আগস্ট মাসের তুলনায় দুই মাসের ব্যবধানে আমদানি পণ্য হ্যান্ডলিং কমেছে ১৭ হাজার ৩৮২ টিইইউ'স।
একইসঙ্গে অক্টোবরে রপ্তানি পণ্য হ্যান্ডলিং হয়েছে ৫৯ হাজার ৩৩১ টিইইউ’স। এর আগে সেপ্টেম্বরে ৬৩ হাজার ৮০৩ টিইইউ’স এবং আগস্টে ৭৫ হাজার ৬৯৭ টিইইউ'স কনটেইনার হ্যান্ডলিং হয়েছে চট্টগ্রাম বন্দরে। অর্থাৎ আগস্টের তুলনায় দুই মাসের ব্যবধানে রপ্তানি পণ্য হ্যান্ডলিং কমেছে ১৬ হাজার ৩৬৬ টিইইউ’স।
এ ছাড়া গত বছরের একই সময়ের তুলনাতেও চট্টগ্রাম বন্দরে আমদানি-রপ্তানি উভয়ই হ্যান্ডলিং কমেছে। ২০২১ সালের অক্টোবরে চট্টগ্রাম বন্দরে আমদানি পণ্যের কনটেইনার হ্যান্ডলিং হয় ১ লাখ ২৪ হাজার ৬৫৯ টিইইউ’স। অন্যদিকে, ২০২১ সালের অক্টোবরে রপ্তানি পণ্য হ্যান্ডলিং হয়েছিল ৭০ হাজার ২৭০ টিইইউ’স কনটেইনার। গত বছরের তুলনায় এবছরের অক্টোবরে রপ্তানি পণ্য হ্যান্ডলিং কমেছে ১০ হাজার ৯৩৯ টিইইউ'স।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব ওমর ফারুক বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরের পণ্য হ্যান্ডলিং কমেছে মূলত ব্যবসায়ীদের কম পণ্য আনা-নেওয়া করার কারণে। চট্টগ্রাম বন্দর বছরে ৩০ লাখের বেশি কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন বন্দর। সাময়িক মন্দা কেটে গিয়ে বেশি পরিমাণ আমদানি-রপ্তানি হলে চট্টগ্রাম বন্দরে হ্যান্ডলিংও বেড়ে যাবে। গত দুই মাস কমলেও আগামীতে সেই ঘাটতিতে পুষিয়ে ওঠা সম্ভব হবে বলেও মনে করেন তিনি।
চট্টগ্রাম চেম্বারের সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, করোনার পর গতবছর কল-কারখানা খোলার পর পণ্য আমদানি-রপ্তানি গতি পেয়েছিল। কিন্তু পরে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ পরিস্থিতিতে বৈশ্বিক মন্দা গত কয়েক মাস ধরে ডলারের দাম আকাশচুম্বি হয়ে যায়। ৮৩ টাকার ডলার ১১০টা পর্যন্ত হয়ে যায়। এতে আমদানিতে বিরূপ প্রভাব পড়ে। স্বাভাবিকভাবে অনেক আমদানি হয়, রপ্তানি পণ্য নির্ভর। যেহেতু আমদানি কমেছে, তাতে রপ্তানিতেও প্রভাব পড়েছে। তাছাড়া বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে বিভিন্ন দেশ বাংলাদেশ থেকে পণ্য আমদানি কমিয়ে দিয়েছে। এতে করে আমদানি-রপ্তানি দুটোই কমেছে।